সরকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছে। সরকার তাদের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে এরা দেশে একদলীয় সরকার কায়েম করেছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের লেবাস পরে আছে। এরা মুখে বলে একটা কাজ করে আরেকটা। বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় এক দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মঈন খান বলেন, ‘যে মামলায় খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়েছে তার বিরুদ্ধে কাগজে-কলমে কোনো প্রমাণ নেই। তা শুধু দেশের মানুষই নয়, বিদেশিরাও জানে। আজকে দেশের গণতন্ত্রহীনতা, হাজার হাজার কোটি টাকার লুটপাট ও বিরোধী মতের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের কারণে সারাবিশ্ব বলছে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। জনগণের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার নাকি দেশকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে। তাহলে সরকারের এত ভয় কেন? উন্নয়ন করে থাকলে তো অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগই জয়ী হওয়ার কথা। আসলে তারা উন্নয়নের নামে জনগণের অর্থ লুট করেছে। জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, বাঙালির জাতির শত বছরের ইতিহাস বলে গণতন্ত্রকামী মানুষ কখনও মাথা নত করে না। এদেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণের সরকার গঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়া শুধু দেশ স্বাধীনই করেননি। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। তারই সহধর্মিণী খালেদা জিয়া জাতির প্রয়োজনে ৮২ সালে রাজনীতিতে আসেন। সেই থেকে আপোষহীনভাবে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। কিন্তু ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচার এরশাদ শাসনামলে চট্টগ্রামের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেছিলেন, যে এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে সে-ই জাতীয় বেঈমান হিসেবে চিহ্নিত হবে। ২৪ ঘণ্টা না যেতেই এরশাদের সঙ্গে আঁতাত করে নির্বাচনের যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন এই শেখ হাসিনা। এসব ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘এ সরকারের কাছে দেশ ও জনগণ কোনোটাই নিরাপদ নয়। এরা আবার ক্ষমতায় এলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। যে মানুষটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ১৮ কোটি মানুষকে একত্রিত করেছেন সেই তারেক রহমানকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে আজ নির্বাসিত রাখা হয়েছে। আজকে দেশবাসী শপথ নিয়েছে যতদিন দেশে গণতন্ত্র ফিরে না আসবে, খালেদা জিয়া মুক্ত না হবে এবং তারেক রহমান বীরের বেশে এদেশে ফিরে না আসবে ততদিন আমরা রাজপথ ছাড়বো না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
এসময় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি তানজিল হাসান, রিয়াদ ইকবাল, রোকনুজ্জামান রোকন, নিজাম উদ্দিন রিপন, আকতারুজ্জামান আকতার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, জহিরুল ইসলাম, রিয়াদ উর রহমান, হাসান আল আরিফসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএম মুসা।