জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেয়া ১০ বছরের কারদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায় প্রকাশিত হয়েছে।
বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গত ৯ মার্চ এই রায় ঘোষণা করেন। রায় প্রদানকারী বিচারকদের সইয়ের মধ্যদিয়ে রায়টি আজ প্রকাশ করা হয়েছে।
রায় প্রকাশের পর দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান জানান, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য পদও থাকবে না হাজী মো. সেলিমের।
এর আগে গত বছরের ৯ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেয়া ১০ বছর কারাদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে তিন বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান তিনি। রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
ওই দিন রায় ঘোষণার পর আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছিলেন, দুদক আইনে করা মামলায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুদক এ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি।
তবে দুদক আইনের ২৭ (১) ধারা অনুসারে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। ওই অভিযোগে তার সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশের রায় দেন আদালত।
এরপর বিচারিক আদালত যেদিন হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাবেন, সেদিন থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। আর আত্মসমর্পণ না করলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে বলা হয়। একইসঙ্গে যেসব সম্পত্তি নিয়ে এ সাজা দেয়া হয়েছে তা বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নিতে হবে।
২০২০ সালের ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতে থাকা যাবতীয় নথি (এলসিআর) তলব করেছিলেন উচ্চ আদালত। সে আদেশ অনুসারে নথি আসার পর আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন।
পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
তাসনিয়া রহমান