নার্স ফারজানার সঙ্গে নৌ-বাহিনীর সাবেক সদস্য রনি মিয়ার বিয়ে হয়। এর ঠিক চার মাস পর ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনা ঘটে গত ১৫ সেপ্টেম্বর। ফারজানার পুরনো প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে স্বামী রনি মিয়ার সঙ্গে ঝগড়া বাধে। পরে ওইদিনই রাতের খাওয়া শেষে স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যায় রনি। মোহাম্মদপুরের বসিলা ব্রিজ (শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু) সংলগ্ন নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পেছনে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেয় রনি।
ঘটনার পর থেকেই নাটক সাজায় রনি। কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় স্ত্রী নিখোঁজের জিডি করেন তিনি। নিখোঁজ জিডির সূত্র ধরে পুলিশ তদন্তে নামে। বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। গ্রেপ্তার হয় ঘাতক নৌ-বাহিনীর সাবেক সদস্য রনি। স্ত্রীকে হত্যার সেই রোমহর্ষক বর্ণনা দেন তিনি।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান বলেন, সন্দেহের তীর বিভিন্ন দিকে থাকলেও রনির কথায় সন্দেহ হয়। তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে রনির রাত্রিকালীন অবস্থানের বিভিন্ন লোকেশন বের করা হয়। সেটার ওপর ভিত্তি করে পুলিশ ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ফারজানার স্বামী রনির দেয়া তথ্যগুলো যাচাইকালে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, তার দেয়া তথ্যগুলো মিথ্যা। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে রনি তার স্ত্রী ফারজানাকে কীভাবে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গুম করেছে, সে ব্যাপারে পুলিশকে তথ্য দেয়। ফারজানাকে হত্যার সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করে রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, রনি মিয়া ফারজানাকে গভীর পানিতে ফেলে দেয়। নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় ফারজানা পানিতে ডুবে যায়। তারপর ঘটনাস্থল থেকে রনি মিয়া চলে আসে এবং আত্মীয়-স্বজনদের ফোন দিয়ে বলে যে, ফারজানা ঝগড়া করে বাসা থেকে বের হয়ে তার সাবেক প্রেমিকের কাছে চলে গেছে। তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ফারজানার ভাই আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।