ষোড়শ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) প্রবেশ পদে (সহকারী জজ) নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৫ জনই নারী শিক্ষার্থী। সারাদেশে মোট ১০৪ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। কমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শরীফ এ এম রেজা জাকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
উত্তীর্ণ হওয়া ইবির শিক্ষার্থীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ফারজানা ইভা, ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের সেলিনা শেলী, ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ফাতেমা জান্নাত, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের রুবাইয়া ইয়াসমিন, মারিয়া সুলতানা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আরিফ হোসেন এবং আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আসাদুজ্জামান নুর।
মারিয়া সুলতানা বলেন, আমি চতুর্থবর্ষের শেষের দিকে পড়াশোনা শুরু করেছিলাম। এই অর্জনে অনেকের অবদান রয়েছে। তাদের সহযোগিতা ছাড়া হয়ত এটা সম্ভব ছিল না। দোয়া রাখবেন যাতে জনগণের ন্যায় বিচার ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করতে পারি।
সেলিনা শেলী বলেন, এই অনুভূতি যে কেমন সেটা আমি বোঝাতে পারব না। সব থেকে বড় বিষয় হলো আমার বাবা মা কে হাসাতে পেরেছি। আশেপাশের সবাই যখন আমাকে নিয়ে গর্ব করছে তখন অত্যন্ত ভালো লাগছে।
আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দা সিদ্দীকা বলেন, শিক্ষার্থীদের সাফল্য শিক্ষকদের কাছে অত্যন্ত আনন্দের। শিক্ষকদের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় অনেকটা শিক্ষার্থীদের উপরই নির্ভর করে। আগামীতে যেন এই সংখ্যা বৃদ্ধি পায় সেই কামনা করছি। আর আমাদের সিলেবাস জুডিশিয়ারির সাথে মিল রেখে প্রস্তুতের চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, ছাত্রীরা এগিয়ে এটা নারী উন্নয়নেরই একটি ধাপ। ছাত্রীরা ঘরে থাকে বেশি, পড়ে ভালো। ক্লাসে ও পড়াশোনাতে তারা বেশি মনোযোগী থাকে। তাছাড়া লেগে থাকার মানসিকতা ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অনেক বেশি।
এদিকে ল’ ন্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগে প্রথম ব্যাচ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেই সাফল্য পেয়েছেন আসাদুজ্জামান নুর। প্রথমবার পরীক্ষাতেই তিনি ৪০ তম হয়েছেন। তিনি এখনো মাস্টার্স সম্পন্ন করেননি। নুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার পর শুরুর দিকে তেমন পড়াশুনায় মনোযোগী ছিলাম না। করোনার সময় জীবন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। অনিশ্চয়তার জীবনে নিজেকে বদলানোর প্রয়াসে নামাজ এবং পড়াশোনায় মনোযাগী হই। বই কেনার তেমন সামর্থ্য ছিল না আমার। আমার বন্ধু হোসনে মোবারক সাগর এবং মোহাম্মদ নাজ্জাসির বই নিয়ে আমি পড়াশোনা শুরু করি। বিজেএসসির প্রিলি হতে লিখিত পুরোটা সময় আমি তাদের বই পড়েছি। বিষয়টি আমার বন্ধু -সহপাঠী ও কাছের মানুষজন জানে।
বিভাগটির সভাপতি সাহিদা আখতার আশা বলেন, আইন অনুষদের সাফল্য দেখে আমি গৌরববোধ করছি। এই অনুষদের নতুন একটি বিভাগ যেখানে একটি ব্যাচ মাত্র অনার্স সম্পন্ন করেছে। আমাদের বিভাগের একজন ছাত্র সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছে। এটি বিভাগের জন্য মাইলফলক তৈরি হবে এবং অন্য শিক্ষার্থীরাও অনুপ্রেরণা পাবে।