নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে হওয়া রহমত উল্লাহ নামে এক প্রযোজকের মামলা নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। যদিও পরে পাল্টা মামলা করেন কিং খানও, যা এখনো চলমান। সেই রেশ না কাটতেই এবার শাকিবের নামে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরেক প্রযোজক।
জানা গেছে, ওই প্রযোজকের নাম মনিরুজ্জামান। ‘মাই ডার্লিং’ নামে একটি সিনেমায় লগ্নি করেছিলেন তিনি। যেটির নায়ক শাকিব খান এবং নায়িকা অপু বিশ্বাস। ২০১৪ সালে সিনেমাটির শুটিং শুরু হয়। প্রযোজক মনিরুজ্জামানের অভিযোগ, শাকিব খান তার সিনেমার শুটিং ফাসিয়েছেন।
এই প্রযোজকের দাবি, শাবির খানের কারণে মোটা অঙ্কের লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। তিনি জানান, ২০১৪ সালে ‘মাই ডার্লিং’-এর ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়। পরের বছর শাকিব -অপুর দাম্পত্য কলহের কারণে আটকে যায় বাকি কাজ, যা আর হয়নি।
প্রযোজক মনিরুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শুটিং ফাসানোর অভিযোগে তিনি শাকিব খানের নামে মামলা করবেন।
প্রযোজক বলেন, ‘আমি ২০১৮ সালে যখন সমিতিগুলোর কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম, তখনই বলেছিলাম সমিতি মীমাংসা করে না দিলে বিষয়টি নিয়ে শাকিব খানের বিরুদ্ধে আদালতে যাবো। কিন্তু ওই সময় অপু বিশ্বাস শিডিউল দিলেও শাকিব দেননি।’
মনিরুজ্জামান এমন দাবিও করেছেন, ‘সে সময় শাকিব খান অপুকে বাদ দিয়ে অন্য নায়িকা নেয়ার কথা বলেন। তিনি বুবলীর নাম প্রস্তাব করেছিলেন। যদি তা না হয়, নায়ক-নায়িকার আলাদা আলাদা শট নিয়ে শুটিং শেষ করতে বলেছিলেন।’
প্রযোজকের কথা, ‘ছবিটির শুটিং আগে যতটুকু যেভাবে হয়েছিল, নায়িকা পরিবর্তন করা বা আলাদা করে শট নেয়া সম্ভব ছিল না। নায়িকা পরিবর্তন করলে সব ফুটেজ ফেলে দিয়ে নতুন করে পুরো শুটিংই করতে হতো। এতে দ্বিগুণ টাকা খরচ হতো। এতে রাজি না হওয়ায় শাকিব আর শিডিউল দেননি। ফলে আর কাজটি হয়নি।’
মামলার কথা উল্লেখ করে এই প্রযোজক বলেন, ‘ভুল হয়েছে ২০১৮ সালেই মামলাটা করা উচিত ছিল। আদালতে গেলে আমি ন্যায়বিচার পেতাম। কারণ, আমি সঠিক পথে ছিলাম, এখনো আছি।’
প্রায় ১০ বছর ধরে কোটি টাকা আটকে আছে উল্লেখ করে মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘একবার ভেবেছিলাম যে ফুটেজ আছে, জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে ছবিটি মুক্তি দেব। কিছু টাকা লোকসান কমবে। কিন্তু ছবিটি এমনভাবে শুটিং করা, কোনোভাবেই সেটা সম্ভব হয়নি। আমার কষ্টের কোটি টাকা জলে যাচ্ছে।’
প্রযোজক বলেন, ‘সামনে সপ্তাহে চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে যাওয়ার কথা আছে। ফিরে একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার কাছে লিখিত সব ডকুমেন্টস আছে। মামলা করব। আর বাড়তি দেয়া পাঁচ লাখ টাকাও আমাকে ফেরত দিতে হবে শাকিব খানকে।’
জানা গেছে, শাকিব খানের কারণে মনিরুজ্জামানের মতো ভুগছেন আরও কয়েকজন প্রযোজক-পরিচালক। তাদের একজন পরিচালক নজরুল ইসলাম। ২০০৮ সালে শাকিব-শাবনূরকে নিয়ে ‘স্বপ্নের বিদেশ’ নির্মাণে নেমেছিলেন তিনি। ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর শাকিব শিডিউল না দেয়ায় বাকি কাজ আর এগোয়নি বলে জানান তিনি।
নজরুল ইসলামের ‘স্বপ্নের বিদেশ’ -এর মতো ঝুলে আছে মেঘমালা কথাচিত্র প্রযোজিত ও জি সরকার পরিচালিত ‘লাভ ২০১৪’ ছবিটির কাজও। শাকিবকে নিয়ে ছবিটি শুটিং শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়। তারপর আর এগোয়নি। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া দেননি শাকিব।