আর্কাইভ থেকে দক্ষিণ আমেরিকা

ছেলের গায়ের রঙ নিয়ে উদ্বেগ ছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে; মেগান

ছেলের গায়ের রঙ নিয়ে উদ্বেগ ছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে; মেগান

ছেলে আর্চির জন্ম হওয়ার আগে থেকেই তার গায়ের রঙ কতোটা কালো হবে তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে। একথা বলেছেন, ব্রিটিশ প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কল। রোববার রাতে সিবিএস টেলিভিশনে ওপরা উইনফ্রের সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক ওই মন্তব্য করেন রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়া মেগান। সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে ধরেছেন রাজপরিবারের বধূ হিসেবে তার নানা উপলব্ধি আর অভিজ্ঞতা।

ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, সিবিএস টেলিভিশনে দেওয়া মেগান বলেছেন, কেন তার ছেলে আর্চিকে প্রিন্স খেতাব দেওয়া হয়নি তার ব্যাখ্যা ওই ঘটনা থেকেই পাওয়া যায়।

সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গ মা আর শ্বেতাঙ্গ বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া মেগান বলেন, ২০১৮ সালে রাজপরিবারে বিয়ে হওয়ার আগে সাদাসিধে জীবনে ছিলেন তিনি। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর অসহায়ত্ব বোধ তাকে এতোই গ্রাস করেছিল যে, আত্মহত্যার কথাও ভাবতে শুরু করেছিলেন তিনি। সাহায্য চেয়েও কাউকে যখন পাশে পাননি তখন নিজের ক্ষতি করার কথাও ভাবতে শুরু করেন।

মেগান বলেন, তারা চায়নি আমার অনাগত সন্তান প্রিন্স বা প্রিন্সেস হোক, সে মেয়ে না ছেলে হবে তা না জেনেই। রীতি অনুযায়ী যা হওয়ার কথা তা না হওয়ায় ভবিষ্যতে সে নিরাপত্তাও পেত না।

আমি যখন অন্তঃস্বত্ত্বা, আমার দিনগুলো একইরকম ছিল। বার বার ওই কথাগুলো ঘুরে ফিরে আসছিল, তুমি নিরাপত্তা পাবে না, কোনো খেতাবও পাবে না। আর যখন ওর জন্ম হবে, ওর গায়ের রঙ কতটা কালো হতে পারে তা নিয়ে তাদের আলাপ আর উদ্বেগ তো ছিলই।

রাজ পরিবারের কে বা কারা গায়ের রঙ নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেছিল তা প্রকাশ করতে চাননি মেগান। তিনি নিজেই সে সময় চুপ ছিলেন না তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল-এই প্রশ্নে মেগান বলেছেন, পরেরটি।

কয়েকদিন আগেই ওই সাক্ষাৎকারের ৩০ সেকেন্ডের একটি টিজার প্রকাশ করেছিল সিবিএস টেলিভিশন। তখন থেকেই এই সাক্ষাৎকার নিয়ে সবার আগ্রহ ছিল।

রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবন শুরু করেছেন মেগান ও হ্যারি। সাক্ষাৎকারটি তাদের সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পর্ক আরও তিক্ত করে তোলার প্রেক্ষাপট তৈরি করল বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, বোঝাপড়ার সঙ্কটের কারণে রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি। তার ভয় ছিল, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি আবার না ঘটে। ১৯৯৭ সালে নিজের মা প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর দিকেই ইঙ্গিত করেছেন হ্যারি।

তিনি বলেছেন, নিজের দাদি ও ব্রিটিশ রানিকে অন্ধকারে রাখতে চাননি তিনি। কারণ তাকে খুবই শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু তার বাবা প্রিন্স চার্লস ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। 

এ নিয়ে দাদির সঙ্গে আমার তিন দফা কথা হয়েছিল। বাবা ফোন ধরা বন্ধ করার আগে তার সঙ্গেও দুই দফা কথা হয়েছে। পরে তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি সব কথা তাকে লিখিতভাবে জানাতে পারি কি না।

হ্যারি-মেগানের সমালোচকরা বলে থাকে, রাজপরিবারের দায়িত্বে যে নিষ্ঠা প্রয়োজন তার বদলে গ্ল্যামারকে গুরুত্ব দিয়েছে তারা। অন্যদিকে তাদের সমর্থকদের ভাষ্য, সেকেলে ব্রিটিশ ধ্যান-ধারণা যে এখনও বর্ণবাদের চেতনা বহন করে চলেছে তা মেগানের প্রতি তাদের আচরণই তার প্রমাণ।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ছেলের | গায়ের | রঙ | নিয়ে | উদ্বেগ | ছিল | ব্রিটিশ | রাজপরিবারে | মেগান