বাজারে শীতকালীন সবজি উঠতে শুরু করেছে, তারপরও আগের সেই চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে৷ রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বেশির ভাগ সবজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতোই উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা।
এদিকে, এক মাস পেরিয়ে গেলেও সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না পেয়াজ, আলু ও ডিম৷ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। তবে ডিমের দাম ডজনে ১৬০ টাকা থেকে কমে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, মহাখালী, হাতিরপুল ও বাড্ডারবাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দাম বেড়ে প্রতি কেজি গোল বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কচুরমুখী ৯০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স-পটোল-চিচিঙা-ঝিঙা-কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ও টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বিক্রেতারা জানান, সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, বগুড়া, যশোর ও কুষ্টিয়ার আশপাশের সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্থান থেকে রাজধানীতে বেশির ভাগ সবজি আসে। সরবরাহে ঘাটতির কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বাড়ছে।
বাড্ডার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মো. মেহেদী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়তি। বাজারে শীতের নতুন সবজি না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই। ’
রাজধানীর কাওরান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে মুরগির দাম বাড়তি। দাম বেড়ে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা এবং মানভেদে সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ’
তবে সবজির এমন উচ্চমূল্য বিপাকে ফেলছে সাধারণ ক্রেতাদের। কাঁচাবাজার করতে আসা ক্রেতা আনিছুর রহমান বলেন, সব কিছুর দামই তো বেড়েছে। আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষরা যে টিকে থাকব, তার অবস্থা নেই। মাছ-মাংসের কথা তো বাদই দিলাম, শাক-সবজির দামও যদি এমন বাড়ে, তাহলে তিন বেলার জায়গায় দু-বেলা খেতে হবে।
ক্রেতা জসীম উদ্দিন বলেন, গরিব মানুষের সস্তার খাবার হলো শাক সবজি। সেটার দামও যদি এমন থাকে তাহলে খাবে কি? যে টাকা নিয়ে আসলে আগে ব্যাগ ভরে সবজি নিয়ে বাড়িতে যেতাম, এখন সেই পরিমাণ টাকায় ব্যাগের অর্ধেকও ভরে না।
সরকারি নির্ধারিত দরে ট্রাকসেলে (খোলাবাজার) ডিম বিক্রি শুরু হওয়ায় বাজারে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। ফার্মের ডিম প্রতি ডজনে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১০৫ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। আলু কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং আদা কেজি ২৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনবাজারে | শীতকালীন | সবজি | তবুও | কমছে | উত্তাপ