আর্কাইভ থেকে দুর্ঘটনা

সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে ভারি যান চলাচল সাময়িক বন্ধ

সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে ভারি যান চলাচল সাময়িক বন্ধ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় মেয়াদ উত্তীর্ণ সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে ভারি যানবাহন চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সেতুটি দীর্ঘ দিনের পুরোনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এমনিতেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। এরই মধ্যেই সেতুটির পাটাতন দেবে ও ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থলবন্দরের ব‍্যবসায়ীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। সোমবার (২৩ অক্টোবর ) সকালে যানচলাচল বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। সোনাহাট সেতুর স্টিল এর অংশের পাটাতন ভেঙ্গে একটি ট্রাক আটকে যায়। পরে অপর প্রান্ত থেকে অন্য একটি ট্রাক এনে আটকে পড়া ট্রাকের সাথে রশি বেঁধে টেনে তোলা হয়।  পরবর্তীতে ট্রাকসহ সকল ভারি যানবাহন চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেয় সেতুটির দুই পাড়ে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী লোকজন। এতে করে সেতুর দুই পাড়ে যানবাহনের লম্বা সারি দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙ্গে গেছে এবং ট্যাংক জাম (লোহার পাতি) খুলে গেছে। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন। স্থানীয়রা বলছেন, ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ দিন পর এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সাথে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়। নির্মাণকালে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়ে ছিল ১০০ বছর। সে মতে সোনাহাট সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। নড়বড়ে সেতুটি যে কোনো সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পাড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থল বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম। ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতুটি পাশে দুধকুমার নদের দক্ষিণে মোট ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার লম্বা পিসি গার্ডার সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। ওই সেতুটির নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও অর্ধেক কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তাই সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয় রবিউল ইসলাম বলেন, এই রেলসেতু দিয়ে পাথর বোঝাই ট্রাক যাওয়ার সময় সেতুটি থরথর করে কাঁপতে থাকে। এছাড়া সরু সেতু দিয়ে যখন একটি ট্রাক যায় তখন পাশদিয়ে অন্য যানবাহন যাওয়ার জায়গা থাকে না। এতে সেতুর দুই প্রান্তে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিমাসে সড়ক বিভাগ সেতুটি মেরামত করে থাকে। এবার হয়ত করেনি তাই পাটাতনটি ভেঙে গেছে। আর এই সেতু দিয়ে যদি পণ্যবাহী গাড়ি না চলে, তাহলে তো স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে,সরকার রাজস্ব হারাবে। কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ব্রিজটি দিয়ে গতকাল রাতে ওভার লোডের ট্রাক যাওয়ার কারণে পাটাতন ভেঙে গেছে। মেরামতের কাজ চলছে, সন্ধ্যার মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। এটা অনেক পুরাতন বেইলি ব্রিজ তো মাঝে মাঝেই এরকম হচ্ছে। এখানে আমাদের সাইনবোর্ড দেয়া আছে যাতে ১০ টনের অধিক লোড নেয়া না হয়। তারপরেও ৩০-৪০ টন লোড নিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি চলছে। অতিরিক্ত রোডের কারণে এই সমস্যাটা হচ্ছে। এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সেতুর | পাটাতন | ভেঙ্গে | ভারি | যান | চলাচল | সাময়িক | বন্ধ