আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আলুর ফলন ভালো হলেও হিমাগার সংকটে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা

আলুর ফলন ভালো হলেও হিমাগার সংকটে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা

কুড়িগ্রামে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ বেড়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিটি হিমাগারের সামনে আলু বোঝাই যানবাহনের লম্বা লম্বা সারি থাকায় তাদের এ দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টার অপেক্ষা করেও মিলছেনা হিমাগারে নিজেদের বস্তা ভর্তি আলু ঢুকানোর সিরিয়াল। রাস্তার দুইদিকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা চলছে ট্রাক, নছিমন, পিকআপের ড্রাইভার, ভ্যানচালক, গরু ও ঘোড়ার গাড়ির গাড়োয়ানদের। কবে এ সিরিয়াল শেষ হলে নিজেরটা রাখার সিরিয়াল আসবে তার অপেক্ষা। এক সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রাম জেলার চারটি হিমাগারে এ অবস্থা বিরাজ করছে।

হিমাগার ব্যবসায়ী ও ম্যানেজাররা জানান, বিগত বছরের চেয়ে অধিক আলু চাষ ও বাম্পার ফলনের কারণে হিমাগারসমুহে চাপ সামলানো যাচ্ছেনা। ধারণ ক্ষমতা প্রায় শেষ হওয়ায় আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবছর কুড়িগ্রামে ৭ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা। প্রতি হেক্টরে ২২ মে. টন ফলন হিসাবে উৎপাদন হয়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ মে.টন। কিন্তু জেলার চারটি হিমাগারের আলু ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৫২ হাজার মে. টন। কিছু আলু ইতোমধ্যে খাবারের জন্য ব্যবহৃত হলেও বিপুল পরিমাণ আলু সংরক্ষণ করা কঠিন হবে। অন্যান্য বছর বাইরের ব্যবসায়ীরা এখানকার আলু কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। খাবার আলু হিসেবেও ট্রাকে ট্রাকে আলু চলে যেত ঢাকাসহ বিভিন্ন মোকামে। এছাড়া মালেয়শিয়া, শ্রীলঙ্কা ও রাশিয়ায় আলু রপ্তানির কারণে আলুর চাহিদা ছিল ব্যাপক। কিন্তু এবার মৌসুমের শুরুতে আলুর দাম কিছুটা ভালো থাকলেও এখন অনেক ন্মিগামী।

বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি আলুর দাম ৯-১০ টাকা তাও ক্রেতা সংকট। এই দরে আলু বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না কৃষকরা। তাই হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য ভিড় করছেন।

সদর উপজেলার শিবরাম গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, এবছর তিনি ৪৭ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। কিন্তু হিমাগারে আলু রাখতে পারছেন না। জায়গা নেই তাছাড়া এখনও প্রায় ৬০০ বস্তা আলু জমিতেই পড়ে আছে।

কাঁঠালবাড়ী বাজারের আলু ব্যবসায়ী বীর বাবুল জানান, খাবার উপযোগী বা হিমাগারে রাখার জন্য আলুর কোন অর্ডার পাওয়া যাচ্ছেনা। চাহিদা না থাকায় আগের বছরের ন্যায় কোথাও আলু পাঠাতে পারছিনা।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, এবছর জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু হিমাগারের রাখার সুবিধা কম থাকায় কৃষকদের স্থানীয়ভাবে কিছু আলু সংরক্ষণের জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আলুর | ফলন | ভালো | হলেও | হিমাগার | সংকটে | কৃষক | ও | ব্যবসায়ীরা