ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে বাঙালির একমাত্র অসাম্প্রদায়িক উৎসবের দিন পহেলা বৈশাখ। দুই বছর পর বাঙালি এবার তাদের প্রাণের উৎসবে মেতেছে। পুরনো বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে আজ।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৬টার পর যন্ত্রবাদন দিয়ে এবারের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর সম্মিলিত কণ্ঠে ছায়ানটের শিল্পীরা রবীন্দ্রসংগীত ‘মন, জাগ মঙ্গললোকে’ গানের মধ্য দিয়ে নতুন বঙ্গাব্দ ১৪২৯ -কে স্বাগত জানানো হয়।
ছায়ানটের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে জরা, ব্যাধি এবং শঙ্কাগুলো ছিল সে সকল বিষয় কাটিয়ে আজ থেকে নতুন একটি বছর শুরু হলো। নতুন বছরটি স্বপ্নে উচ্ছ্বসিত হবার মতো একটি বছর হবে এমনটিই প্রত্যাশা ছায়ানটের।
এবার ছায়ানটের ৮৫ জন শিল্পী বর্ষবরণ উৎসবে অংশ নেন। ভোর থেকে অনুষ্ঠান ঘিরে দর্শকদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। তারা প্রত্যাশা করেছেন এ আয়োজন যেন আর থমকে না যায়।
অনুষ্ঠানে পঞ্চকবির গান ছাড়াও থাকছে লোকগান, ব্রতচারীদের একটি গান ‘বাংলা ভূমির প্রেমে আমার প্রাণ হইল পাগল’। লোকগানের মধ্যে থাকছে ‘নাও ছাইড়া দে মাঝি, পাল উড়াইয়া দে’।
এবারের বর্ষবরণে গেটের সংখ্যা আটটি। এরমধ্যে প্রবেশপথ তিনটি। তা হলো- অরুনোদয়, রমনা রেস্তোরাঁ, অস্তাচল। বের হওয়ার পথ দুটি যথাক্রমে বৈশাখী ও উত্তরায়ন। একইসঙ্গে প্রবেশ এবং বের হওয়ার পথ তিনটি যথাক্রমে শ্যামলিমা, স্টার গেট এবং নতুন গেট।
এছাড়া আগত দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে জরুরি চিকিৎসা সেবা, নারী/সিনিয়র সিটিজেন/শিশুদের জন্য রয়েছে বিশ্রামাগার। তবে রমজান মাস হওয়ায় এবার থাকছে না কোনো খাবারের দোকান।
বর্ষবরণ উৎসব ঘিরে এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে তাই রমনাসহ পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। পুলিশ, র্যা বের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নিয়োজিত আছে নিরাপত্তা কর্মীরা।
রাজধানীতে ১৯৬৭ সালে প্রথম রমনার বটমূলে পয়লা বৈশাখের সূর্যোদয়ের সময় সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছায়ানট। সেই অনুষ্ঠানই মূলত নববর্ষ বরণের সাংস্কৃতিক উৎসবকে সারাদেশে বিস্তারিত হতে প্রেরণা সঞ্চার করেছে। সেই থেকে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের একটা অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গও হয়ে উঠেছে ছায়ানটের বর্ষবরণের রেওয়াজ।
তাসনিয়া রহমান