আসছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে জাতিসংঘসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন সংস্থা নানাভাবে অনুসন্ধান বা তদারকি করতে চাইলেও নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে। আর এ কারণেই স্বাধীন তদারকি গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এমপি আবিগালি বয়েড।
গেলো ৩০ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস পার্লামেন্টে 'অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস' দলের এমপি আবিগালি বয়েড স্পিকারের উদ্দেশ্যে প্রথম পয়েন্টে বলেন,
এই হাউস যেন নোট করে যে-
(এ) যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিস অনুযায়ী, ২০০৯ সালে বাংলাদেশে বৈধ অনুষ্ঠিত হলেও ‘১৪ ও ‘১৮ সালের বাংলাদেশের নির্বাচন বিতর্ক ও কারচুপির অভিযোগ ওঠে। ওই নির্বাচনের নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
(বি) স্বাধীন অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অভাব, রাজনৈতিক দমন ও বিরোধীদের ওপর ক্র্যাকডাউনের জন্য ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপক সমালোচনা করেছে। সংস্থাটি ওই বছর নির্বাচনকালীন সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ, নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
(সি) নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে, বিরোধী দল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতাদের কারাগারে পাঠানো বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের যে কোনো আভাসকে চূর্ণ করে। এ ধরনের দমন ভোটারদের নির্বাচন করার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে, নির্বাচনী ‘প্লেয়িং ফিল্ড’কে মারাত্মকভাবে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে নিয়ে যায়।
দ্বিতীয় পয়েন্টে অস্ট্রেলীয় এমপি বলেন, এই হাউস যেন অস্ট্রেরিয়া সরকারকে এই আহ্বান জানায় যে:
(এ) আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জাতিসংঘ বা অন্যান্য স্বনামধন্য সংস্থার স্বাধীন তদারকি গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করতে। একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য এ ধরনের তত্ত্বাবধান অত্যাবশ্যক যা (নির্বাচনকে) বেআইনি অনুশীলন ও হস্তক্ষেপমুক্ত করবে;
(বি) বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তির জন্য সাহায্য করতে, যিনি অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ ও তার অধিকারবঞ্চিত;
(সি) বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখতে চলমান ব্যর্থতার জন্য শেখ হাসিনা, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্য ও গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘টার্গেটেড স্যাংশন’ আরোপ করতে। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা এই শক্তিশালী বার্তা হিসেবে কাজ করবে যে অস্ট্রেলিয়ান সরকার মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি তার প্রতিশ্রুতিতে অটল রয়েছে;
এবং
(ডি) স্বচ্ছতার অভাব, রাজনৈতিক কর্মীদের দমন ও কারচুপির নির্বাচনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের ওপর কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের জন্য সমমনা দেশগুলোকে সহযোগিতা করতে।