বাঙালি জীবনে বেশ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে একটি খাবার, নাম তার মুড়ি। দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় বেশ জোরালো উপস্থিতি রয়েছে এ খাবারটির। কিন্তু মুড়ি শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী? এ নিয়ে কিন্তু সবার খুব স্পষ্ট ধারণা নেই। কারণ নিত্য নৈমিত্তিক জীবনে মুড়ি এমনভাবে জড়িয়ে রয়েছে যে তাকে নিয়ে আদৌ খুব বেশি ভাবনা চিন্তা করা হয় না।
যদিও এটা বোধহয় সকলেই কম বেশি জানেন যে মুড়ি এমন একটি খাবার যা অ্যাসিডিটি রোধ করে। শরীরে যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, যাদের অ্যাসিডিটি হয়, তাদের ক্ষেত্রে মুড়ি খুবই উপকারী। তাই নিয়মিত মুড়ি খেলে অ্যাসিডিটি কমবে।
শুধু তাই নয়, পেটের সমস্যায় শুকনো মুড়ি কিংবা ভেজা মুড়ি খেলে তাৎক্ষণিক উপকার পাওয়া যায়। এমনকি হজমের সমস্যায় চিকিৎসকেরা প্রায়ই মুড়ি খাওয়ার পরামর্শ দেন। মুড়িতে ভিটামিন বি ও প্রচুর পরিমাণে মিনারেল থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
কিন্তু আরও কিছু এমন গুণ এই চাল থেকে তৈরি মুচমুচে খাবারটির ভেতরে রয়েছে যা কেউ হয়তো ভাবতেও পারবেন না। আসলে আমাদের সকলকেই মুড়ি কিন্তু চিবিয়ে খেতে হয়। এর ফলে দাঁত ও মাড়ির একটা ব্যায়াম হয়। নিয়মিত মুড়ি খেলে দাঁত ও মাড়ি ভাল থাকে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, মুড়িতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ফাইবার, যা হাড় শক্ত করে। এছাড়া মুড়িতে রয়েছে শর্করা, যা প্রতিদিনের কাজে শক্তি যোগান দেয়।
অন্যদিকে নতুন ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে ওজন কমানোতেও কিন্তু মুড়ির জুড়ি নেই। কম ক্যালরির খাবার খাবেন, আবার পেটও ভরবে, যদি এমনই আপনার ইচ্ছা হয় তাহলে মুড়ি খেতে পারেন। সারাদিন, বাড়িতে, অফিসে যখনই হাল্কা ক্ষুধা পাবে, তখন মুড়ি খেয়ে নিলে ক্ষুধা মিটবে, ক্ষতিও হবে না।
যাদের পেটের সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে মুড়ি বিশেষ উপকারি। মুড়িতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তাই হজমের সমস্যা থাকলে চোখ বন্ধ করে মুড়ি খেতে পারেন। পাশাপাশি, অন্ত্র ভাল রাখতেও সাহায্য করে এই খাবার। কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতেও সাহায্য করে এই ফাইবার।
এছাড়া মুড়িতে সোডিয়ামের পরিমাণ অত্যন্ত কম থাকে। যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন, তারা মুড়ি খেতে পারেন।
সবমিলিয়ে মুড়ি যে একটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ও একইসঙ্গে সাশ্রয়ী খাবার সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।