যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় পুলিশি নির্যাতনে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি জর্জ ফ্লয়েডের পরিবারকে দুই কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেবে মিনিয়াপোলিস নগর কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৯২ হাজার টাকার বেশি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গেল বছরের ২৫ মে নিরস্ত্র ফ্লয়েডকে হাঁটুর তলায় চেপে ধরে নির্যাতন ও হত্যা করে এক শেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রসহ পুরো বিশ্বে।
মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিলের এক ভোটে বিচারপূর্ব আপসরফার পক্ষে মত দিয়েছে সবাই। অঙ্গরাজ্যটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঙ্কের অর্থ দিয়ে ফ্লয়েডের পরিবারের সঙ্গে আপস করতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।
ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবী বেন ক্রাম্প বলেছেন, একটি ভুল মৃত্যুতে সর্ববৃহৎ অঙ্কের বিচারপূর্ব আপস চুক্তি এই বার্তা দিচ্ছে, কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনের গুরুত্ব রয়েছে এবং পুলিশি নির্যাতন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
আপস চুক্তির ঘোষণার পর বেন ক্রাম্প বলেন, ন্যায়বিচারের পথে এটি একটি পদক্ষেপ মাত্র। ফ্লয়েডের মৃত্যু বর্ণবাদ ও পক্ষপাতদুষ্টতা নির্ণয়ে জলন্ত উদাহরণ।
ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, আট মিনিট ১৫ সেকেন্ড ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর হাঁটু দিয়ে মাটিতে চেপে ধরে রাখেন পুলিশ কর্মকর্তা ডেরেক শাউভিন। ফ্লয়েড চিৎকার করে বলতে থাকে তিনি নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে।
বিশ ডলারের একটি জাল নোট দিয়ে সিগারেট কেনার অভিযোগ জানিয়ে এক দোকানের কর্মচারী ৯১১ নম্বরে কল দিলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফ্লয়েডকে আটক করে পুলিশ।
ঘটনার পরদিন বরখাস্ত হয় শাউভিনসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা। ২৯ মে হত্যার অভিযোগ করে স্থানীয় কাউন্টি কর্তৃপক্ষ। মাসখানেক পর সিভিল কোর্টে মামলা দেয় ফ্লয়েডের পরিবারের আইনজীবীরা। অভিযোগে বলা হয়, পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে নগর কর্তৃপক্ষ।
এর আগেও ১৯ বছর ধরে পুলিশে চাকরি করা ডেরেক শাউভিনের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ উঠেছিল। ফ্লয়েডকে হাঁটুর নিচে চেপে নির্যাতনের ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় স্পষ্ট ধরা পরে। ভাইরাল হয় ওই ভিডিও।
আগামী ২৯ মার্চ মামলার শুনানির কথা রয়েছে। তবে মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিল চাইছে, বিচারের আগেই পরিবারের সঙ্গে আপসরফা করতে।
এসএন
