আর্কাইভ থেকে এশিয়া

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য করোনার ১০০ কোটি ডোজ টিকা তৈরি হবে

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য করোনার ১০০ কোটি ডোজ টিকা তৈরি হবে

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জন্য ২০২২ সালের শেষ নাগাদ ১০০ কোটি ডোজ করোনা টিকা দিতে রাজি হয়েছে কোয়াড। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র-এই চার দেশের সমন্বয়ে গঠিত সংস্থাটির প্রথম বৈঠকে এই ভ্যাকসিন সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে বোঝাপড়া সুদৃঢ় করার জন্য তিনটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা হবে। গতকাল শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, কোয়াডের বৈঠকের উদ্যোক্তা ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা।

ভার্চুয়াল বৈঠকের পর শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, একজোট হয়ে করোনার টিকা উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় গতি আনতে সম্মত হয়েছে চার দেশ। জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা ভারতে উৎপাদন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান জানান, টিকা উৎপাদনের জন্য অর্থায়ণ করবে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র। ভারতে উৎপাদন, মার্কিন প্রযুক্তি, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ণ ও অস্ট্রেলিয়ার লজিস্টিকের সমন্বয়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, বৈঠকে টিকা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ও নয়া প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোয়াডের উদ্দেশ্য ভারতের ‘সারা বিশ্বই একটি পরিবার’ এই বিশ্বাসের সঙ্গে খাপ খায় বলে জানান মোদি। আঠারো মাস আগে কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছিল। এবার শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের মাধ্যমে এটা প্রমাণ হলো ক্রমেই পরিণত হচ্ছে কোয়াড। আঞ্চলিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এটি বড় ভূমিকা পালন করবে বলে জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

মোদির মতোই সরাসরি চীনের কথা বলেনি বাইডেনসহ অন্যান্য নেতারা। বাইডেন বলেন, এই অঞ্চলে আন্তর্জাতিক আইন বলবৎ থাকতে হবে। মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক চারটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তবে বৈঠকে আকারে ইঙ্গিতে চীনের কথা উঠে আসে বারবার। এমনকী চীনের আচরণে চিন্তিত হয়ে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকটি হচ্ছে বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা। বৈঠকে চীনের গতিবিধি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সংঘর্ষের বিষয়টিও ওঠে আসে। এ বিষয়ে ভারত অন্যান্য দেশকে পাশে পেয়েছে বলে জানা গেছে।

অবশ্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রিংলা জানান, কোনো দেশের বিরুদ্ধে নয় কোয়াড। এটি ইতিবাচক উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত। এদিন কোয়াড ভ্যাকসিন পার্টনারশিপ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভিন্ন দেশকে সুলভে টিকা দিতে নিজেদের সম্পদ কাজে লাগাবে চারটি দেশই।

বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে আবিষ্কৃত করোনার টিকা উৎপাদন করা হবে ভারতে। জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা ভারতে উৎপাদন করা হবে ধারণা করা হচ্ছে। টিকা উৎপাদনের জন্য অর্থ দেবে ইউএস ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন (ডিএফসি), জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা), জাপান ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি)র মতো সংস্থাগুলো।

কোয়াড বৈঠকে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ অন্তত ১০০ কোটি টিকা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া অর্থ, লজিস্টিক সাপোর্ট এবং প্রশিক্ষণ দানসহ বিভিন্ন ভারত মহাসাগরীয় ও প্যাসিফিক আইল্যান্ডে টিকা পৌঁছে দেবে। সস্তায় ঋণ দেবে জাপান। ভ্যাকসিন বণ্টনে কোভ্যাক্স, ডব্লিউএইচও, গ্যাভি, আসিয়ান প্রভৃতি জোট ও সংস্থার সহায়তা নেওয়া হবে।

এটি ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত কোয়াড গোষ্ঠীর প্রথম শীর্ষ বৈঠক। ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনের প্রভাব বিস্তারকে মোকাবিলা করা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়া চলতি বছর একসঙ্গে বৈঠক করার অঙ্গীকার করে চার নেতা।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন দক্ষিণপূর্ব | এশিয়ার | জন্য | করোনার | ১০০ | কোটি | ডোজ | টিকা | তৈরি | হবে