আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মিস্টার ডিপেন্ডেবলের ৩৫তম জন্মদিন আজ

মিস্টার ডিপেন্ডেবলের ৩৫তম  জন্মদিন আজ

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে সবচেয়ে পরিশ্রমী ক্রিকেটারের কথা বললে যার নামে সবার আগে আসবে তিনি হলেন মুশফিকুর রহিম। ধৈর্য, অধ্যবসায় ও একাগ্রতার প্রতিমূর্তি এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান বর্তমানে দলের ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ।  নিজ গুণে ব্যাট হাতে বাইশগজে ভরসার অন্য নাম হয়ে উঠেছেন মুশফিক। এজন্য তাকে মিস্টার ডিপেন্ডেবল নামেও ডাকেন অনেকেই। 

দেশের ক্রিকেটের অন্যতম ভরসার নাম তিনি। যদিও ব্যাট হাতে সময়টা ভালো যাচ্ছে না মুশির। চারদিকে বইছে সমালোচনার ঝড়। সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছেন তিনি। ঘরের মাঠে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজে স্বরূপে ফিরবেন এ ব্যাটার, জন্মদিনে এমনটাই প্রত্যাশা করবেন তার ভক্তরা।

আজ মুশফিকুর রহীমের ৩৫তম জন্মদিন। ১৯৮৭ সালের ৯ মে বগুড়ার মাটিডালিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। যদিও তার সার্টিফিকেটগত জন্মদিন ৯ জুন। যে কারণে প্রতিবছর মুশফিকের জন্মদিন নিয়ে একটা দোটানার সৃষ্টি হয় সবার মাঝে। তবে মুশফিক নিজেই নিশ্চিত করেছেন, তার জন্মদিন আজকের তারিখ অর্থাৎ ৯ মে।
 
সাজানো গোছানো টেকনিক, পরিপাটি ব্যাটিং শৈলি আর নিশ্ছিদ্র ডিফেন্স- ক্রিকেট ব্যাকরণের সব শট খেলার সহজাত সামর্থ্যের অধিকারী মুশফিক সময়ের প্রবাহতায় আজ দেশের অন্যতম সেরা, সফল ও স্বার্থক উইলোবাজ।

মুশফিকের শুরুর গল্পটা একটু ভিন্ন এবং ব্যাট হাতে সাদামাটা। খালেদ মাসুদ পাইলট যখন দলের নিয়মিত উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান, তখন অন্য কোনো কিপারের দলে অন্তর্ভূক্তির কথা ভাবাই যেতোনা। ২০০৫ ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট স্কোয়াডে ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাক পান বগুড়ার  এই ছেলে। 

ইংল্যান্ডের বৈরী পরিবেশ ও পেস আক্রমণের বিপক্ষে দুই প্রস্তুতি ম্যাচে সাসেক্সের বিপক্ষে ৬৩ এবং নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৫ রানের ইনিংস মুশফিকের। এতি জায়গা নিশ্চিত হয় প্রথম টেস্টের একাদশে। অভিষেক টেস্টে ব্যাট হাতে খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও স্মৃতিটা বেশ রোমাঞ্চ জাগানিয়া বটে।

সময়টা ২০০৫, ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে মাত্র ১৬ বছর বয়সে সাদা পোশাকে মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম। এত অল্প বয়সে তার আগে লর্ডসে কোনো টেস্ট খেলোয়াড় টেস্ট খেলেনি। প্রথম ইনিংসে তিন অঙ্ক ছোঁয়া তিন টাইগার ব্যাটসম্যানের একজন ছিলেন তিনি।  প্রথম ইনিংসে ১৯ রান করা মুশফিক দ্বিতীয় ইনিংসে করেন মাত্র ৩ রান।

তার উইকেট কিপিং এবং মিডল ওর্ডারে টাইগারদের মূল ভরসা। ২০০৯ সালের আগস্ট থেকে ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মুশফিকুর রহীম দলের ভাইস ক্যাপ্টেন ছিলেন।
 
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৮০টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। দেশের ইতিহাসের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ২টি ডাবল সেঞ্চুরি করা মুশফিক মোট সাতটি সেঞ্চুরিতে ৩৬.২৬ গড়ে রান করেছেন ৪৯৩২।

ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৩৩ ম্যাচ খেলে ৩৬.৭৯ গড়ে মুশফিকের রান ৬৬৯৭, সেঞ্চুরি আটটি। এদিকে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতেও টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ১০০টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ছয় ফিফটিতে মুশফিকের নামের পাশে রয়েছে ১৪৯৫ রান।

মুশফিক ২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। তার অধীনে বাংলাদেশ টেস্টে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার মতো পরাশক্তিদের। প্রথমবারের মতো খেলেছে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে। সবমিলিয়ে ৩৭টি ওয়ানডে, ৩৪টি টেস্ট এবং ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিক।

হাসিব  মোহাম্মদ 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন মিস্টার | ডিপেন্ডেবলের | ৩৫তম | | জন্মদিন | আজ