আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ডিসির আশ্বাসে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সেই শিক্ষার্থী অনশন ভাঙলেন

ডিসির আশ্বাসে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সেই শিক্ষার্থী অনশন ভাঙলেন

১৩ ঘণ্টা পর আমরণ অনশন স্থগিত করলেন ঢাবির সেই মেধাবী প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আরটিভির মনিমিক্স পদকপ্রাপ্ত শাহিন আলম। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের চাকরির দেয়ার আশ্বাসে এই অনশন স্থগিত করেন তিনি। 

সোমবার (৯ মে) রাত সাড়ে ১০টায় এই ভনশন ভাঙ্গেন শাহিন বলে নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা।

তিনি জানান, গতকাল সকাল থেকে চাকরির দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাহিন আলম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশের পর নজরে আসে। বিকেল ৪টায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাহীন আলমকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়ে যাওয়ার জন্য নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আসেন।

তিনি তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তখন তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভঙ্গ করবেন না। পরে সন্ধ্যায় আমি যাই। আমাকেও সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভঙ্গ করবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে রাত সাড়ে ১০টায় তিনি অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন।

প্রসঙ্গত, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আলমপুর গ্রামের কৃষক আবদুল কাদের ও মোছা. ফারা বেগমের দ্বিতীয় সন্তান শাহীন আলম। তিনি তখন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। বাড়ির কাছে আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েন। হঠাৎ এক দিন জ্বর হয়। ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়ে জ্বর সেরে যায়। কিন্তু ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ হারিয়ে যায় তার। তবুও থেমে থাকেনি পড়ালেখা। ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন। এখন মাস্টার্স শেষ করার অপেক্ষায় আছেন তিনি।

২০২০ সালের জুলাই মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিনা পয়সায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়ার ঘোষণা দেন। করোনাকালে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু করার চিন্তা থেকে এ উদ্যোগ নেন শাহীন। দেশ-বিদেশের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারে পারদর্শী করে তোলেন তিনি। তিনি প্রমাণ করেছেন, তারাও পারেন। কিন্তু তার ভাগ্যে জোটেনি সরকারি চাকরি। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও শেষ পর্যন্ত চাকরি হয়নি তার।

শাহিন আলম বলেন, বিকেলের দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেতে বলা হয়। আমি তাদের জানিয়ে দেই একটি চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে। পরে রাত ১০টার দিকে জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম আশ্বাস দেন চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। এজন্য আমরণ অনশন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। চাকরি না পেলে আবারও অনশনে বসা হবে।

তাসনিয়া রহমান

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ডিসির | আশ্বাসে | দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী | শিক্ষার্থী | অনশন | ভাঙলেন