নাশকতার ব্যাপারে আমাদের গোয়েন্দা তথ্য ছিল। কিন্তু কোন ধরনের তথ্য ছিল? নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু কোথায় হবে এটা বলা কঠিন। তবে আমাদের নজরদারি অব্যাহত ছিল। নজরদারি ছিল বলেই তৎক্ষণাৎ কিছু ধরেছি। তদন্ত চলছে, দেখি কি পাওয়া যায়। ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি তদন্তাধীন। বলেছেন র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) বিভিন্ন নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শন ও নির্বাচন কেন্দ্রে নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও র্যাবের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে মিরপুর-২ এর মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে এসব কথা বলেন তিনি।
গতকাল (শুক্রবার) বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে একটি বড় ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। আজ সকাল থেকে বিএনপি ও জামায়াতসহ অন্য রাজনৈতিক দলের হরতাল কর্মসূচি চলছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আপনি কি মনে করেন ভোটাররা নির্বিঘ্নে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন? এমন পরিস্থিতিতে ভোটাররা কী ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছে বলে আপনি মনে করেন না?
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, এ ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই ভোট যারা বয়কট করেছেন বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের কথা আমরা জানি। আমরা গতকাল (শুক্রবার) তিনজনকে আটক করেছি। তাদের কাছে পেট্রোল বোমা পাওয়া গেছে ২৮টি, ককটেল পাওয়া গেছে ৩০টি। তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, যেকোনো ঘটনা যখন ঘটে আমরা অবশ্যই তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। কারণ বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনা তদন্তাধীন। তথ্য পেলে আমরা অবশ্যই আপনাদের জানাব।
তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এমন কোনো হুমকি তৈরি হয়নি, এমন কোনো আশঙ্কা নেই যে মানুষ নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারবে না। শুধু র্যাব ফোর্সেস না, সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এখন পর্যন্ত সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চমৎকার, স্বাভাবিক। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারবেন বলে আমি মনে করি।
র্যাব মহাপরিচালক আরও বলেন, আমরা নির্বাচন উপলক্ষ্যে তিনটি ফেজে কাজ করছি। নির্বাচন পূর্ববর্তী অবস্থা আজ থেকে শেষ। আগামীকাল হবে নির্বাচন। এই নির্বাচনে যারা ভোট দিতে আসবেন, আমাদের কাজ তাদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে আসা নিশ্চিত করা। ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করা। যারা নির্বাচনী কাজে সংশ্লিষ্ট এবং ভোটকেন্দ্রে রয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পরে যারা জয়ী হবেন বা পরাজিত হবেন তাদের মধ্যেও ঝামেলা হয়, সংঘর্ষ হয়। নির্বাচনের পরে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে সেজন্য আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। সুতরাং ভয় পাওয়ার বা আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি খুরশীদ আরও আলম বলেন, ২০১৩ ও ১৪ সালের দিকে আমি রাজশাহীর অ্যাডিশনাল ডিআইজি ছিলাম। সে সময়ের কথা যদি আপনি মনে করেন, সে তুলনায় এ বছরে তার ৩০ শতাংশ নাশকতাও নেই। আর ইন্টেলিজেন্স দুর্বলতা যে কথাটি আপনি বললেন, হ্যাঁ আমাদের কাছে তথ্য ছিল কিন্তু কোন ধরনের তথ্য ছিল? নাশকতা ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু কোথায় হবে এটা কিন্তু বলা ডিফিকাল্ট। তবে আমাদের নজরদারি অব্যাহত ছিল। নজরদারি ছিল বলেই আমরা রাতেই তৎক্ষণাৎ কিছু ধরেছি। তদন্ত চলছে, দেখি কি পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, আগামীকাল (রোববার) জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষ্যে তো চলাচলের কোনো সীমাবদ্ধতা বা নিষেধাজ্ঞা নেই। শুধু কিছু পরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় অবশ্যই চলাচল করতে পারবে। কিন্তু এক এলাকার ভোটার, অন্য এলাকার ভোটকেন্দ্রে গেছে বা যাচ্ছে কি না এটা দেখা হবে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসবে, তবে বহিরাগতরা নয়।
এএম/