যারা হাজার-হাজার মণ ধান আড়তদারির নাম করে বিনা লাইসেন্সে স্টক করছে, তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো উপায় নেই। আমার বাবা হলেও উপায় নেই। বলেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ধান-চালের বাজার ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী নিজের বাড়ি থেকেই এ কার্যক্রম শুরু করেছেন উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপারেশনে আছে। ব্যবসায়িক সূত্র বা ইকোনমিক্স থিওরিতে বলে যখন চাহিদা বেশি হয় তখন দাম বাড়ে, সরবরাহ কমে গেলে দাম বাড়ে। আমি তো এই মুহূর্তে সরবরাহ কমের কোনো অবস্থা দেখছি না। প্রচুর ধান আছে। সরবরাহ যাতে না কমে যায় তার জন্য আমরা ইতোমধ্যে ট্যাক্স ফ্রি করে দিয়ে আমদানি করার চেষ্টা করছি, আমাদের ফাইল প্রসেসে আছে। হয়ত আমরা এটা ২-৪-৫ দিনের মধ্যে ফাইনাল করব। কারণ অযথা স্টক করে রেখে পরে আবার বলবেন, আমরা মরে গেলাম, মরে গেলাম। এ কথা যাতে না শুনি।
তিনি বলেন, একদিকে অভিযান, অন্যদিকে আপনাদের বিবেক, আরেকদিকে আমাদের আমদানি পদ্ধতি; প্রয়োজনে সরকারিভাবে আমদানি করবো। দরকার হলে আমরা ওএমএস থানায় থানায় ছেড়ে দেব কিন্তু বাজার বাড়তে দেওয়া যাবে না। এ বিষয়ে আপনারা আমার সঙ্গে একমত হলে হাত উঠান।
এ সময় উপস্থিত ব্যবসায়ীরা হাত উঠিয়ে বলেন, ‘একমত।’
এ পর্যায়ে মন্ত্রী বলেন, তাহলে কাল থেকে বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে? আমি কিন্তু আবার নতুন করে যাত্রা শুরু করলাম।
মন্ত্রীর এ কথায় চালের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দেন ব্যবসায়ীরা।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে যাদের ডেকেছি তারা সবাই কমিটমেন্ট করেছেন, হঠাৎ যেমন লাফিয়ে দাম উঠেছে, তেমন লাফিয়ে দাম কমাবেন। তারা কথা দিয়েছেন, দ্রুতই আগের দামে নামিয়ে নিয়ে আসবেন। বিশেষ করে মোটা চাল বা আমন চালের দাম কমিয়ে নিয়ে আসবেন।
ইতোমধ্যে বাজার মনিটরিংয়ের জন্য টিম করা হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কন্ট্রোল রুম খুলেছি, আমাদের অভিযান চলছে। আগামীকাল দেশের ৮টি বিভাগে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এরই মধ্যে অভিযান চলছে। অভিযানে যার কাছে অবৈধ মজুত পাওয়া যাবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, দাম বৃদ্ধির ঘটনাটা ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হয়েছে। ব্যবসায়ীরা চালের দাম না কমলে প্রয়োজনে আমরা আমদানি করবো। আমদানির ক্ষেত্রে শূন্য শুল্কের জন্য ফাইল তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলে বা আমাদের যখন প্রয়োজন হবে তখন আমরা আমদানি করব।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি মাসে টিসিবির মাধ্যমে আমরা এক কোটি পরিবারকে ৫ কেজি করে চাল দিচ্ছি। ওএমএস চলছে, আগামী মাস থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হবে। সুতরাং চালের দাম স্থিতিশীল থাকবে।