আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

বিশ্ব বাবা দিবস আজ

বিশ্ব বাবা দিবস আজ

বাবা মানে ঠিকানা, বাবা মানে নির্ভরতার আকাশ। মানে বাবা শাশ্বত, চির আপন, চিরন্তন। বাবা মানে নিরাপত্তার চাদর। বাবা মানে শক্ত খুঁটির ঘর। সন্তানের প্রতি বাবার স্নেহ-আদর যেমন পরিমাপ করা যায় না, তেমনি মাপা যায় না সন্তানকে ঘিরে বাবার স্বপ্ন-সাধের সীমানাও।

বাবা শুধু একজন মানুষ নন, কিংবা একটি সম্পর্কের নাম নয়। বাবার মাঝে জড়িয়ে আছে বিশালত্তের এক অদ্ভুত মায়াবী প্রকাশ। পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু একজনও খারাপ বাবা নেই।

আজ বিশ্ব বাবা দিবস। 

বিশ্বের ৫২টি দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববার প্রতি বছর দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এ বছর তৃতীয় রোববার হিসেবে ১৯ জুন পালিত হচ্ছে দিবসটি। বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা চিরন্তন, প্রতিদিনের-প্রতিক্ষণের। তারপরও বাবার জন্য বিশেষ দিন হিসেবে প্রতি বছর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও যে তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল- এটা বোঝানোর জন্যই এই দিবসটির প্রচলন। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকে যার শুরু।

বাবা দিবস নিয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটি হলো, ওয়াশিংটনের সোনোরা লুইস স্মার্ট নামের একজন নারী এ দিন উদযাপন শুরু করেন। ষষ্ঠ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা গেলে তার বাবাই তাদরে বড় করে তোলেন। ১৯০৯ সালে সোনোরা গির্জার একটি বক্তব্যে মা দিবসের কথা জানতে পারেন। তখন তার মনে হলো, বাবার জন্যেও এরকম একটি দিবস থাকা উচিত।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন ধর্মযাজক তার এ আইডিয়াটি গ্রহণ করেন। ধারণা করা হয়, ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথমবারের মতো বাবা দিবসটি পালন করা হয়, যদিও তা আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপিত হয়নি। ১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন সিদ্ধান্ত নেন যে, প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস হিসাবে পালন করা হবে।  ছয় বছর পর এটিকে আইনে পরিণত করেন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন।

সন্তানের জন্য বাবার ভালোবাসা অসীম। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন। তিনি সন্তান হুমায়ুনের জীবনের বিনিময়ে নিজের জীবন ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। এমন স্বার্থহীন যার ভালোবাসা, সেই বাবাকে সন্তানের খুশির জন্য জীবনের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়।

বাবা দিবসে সন্তানদের সামনে সুযোগ আসে বাবাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানানোর। তাছাড়া বাবা দিবস পালনের ফলে সমাজে এবং পরিবারে বাবাদের যে অবদান তা যে সমাজ এবং নিজের সন্তানরা মূল্যায়ন করছে, এ বিষয়টিও বাবাদের বেশ আনন্দ দেয়। তাছাড়া অনেক সন্তানই আছে, যারা পিতা-মাতার দেখাশোনার প্রতি খুব একটা মনোযোগী নয়। মা দিবস বা বাবা দিবস তাদের চোখের সামনের পর্দাটি খুলে ফেলে পিতা-মাতার প্রতি তার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের পরিবার তথা সমাজে পিতার যে গুরুত্ব তা আলাদাভাবে তুলে ধরাই বাবা দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য।বাবাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

যার বাবা নেই একমাত্র সে-ই জানে বাবা না থাকার বেদনা। ‘বাবা’ শব্দটি পৃথিবীর সর্বত্র নিখাঁদ ভালবাসার সাথে উচ্চারিত হয়। নানাদেশে ভাষা অনুযায়ী বাবাকে একান্ত নিজস্ব ভাষায় ডেকে থাকে সন্তানেরা।

বিশ্ব বাবা দিবসে পৃথিবীর সকল বাবার প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও ভালাবাসা।

অনন্যা চৈতী

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন বিশ্ব | বাবা | দিবস | আজ