রমজানের শুরুতে কাঁচাবাজারের তেজিভাব এখন কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে বাজারে ঊর্ধ্বমুখী মাছ-মাংস ও চালের দাম। পাশপাশি চড়া রোজার পণ্যের বাজারও। এতে বাজারে এসে বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্রই মিলেছে গণমাধ্যের কাছে।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৬০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, মুলা ২০-২৫ টাকা, শসা ৪০-৫০ টাকা ও লতি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, খিরাই ৩০-৪০ টাকা, গাজর ২০-২৫ টাকা, টমেটো ৩৫-৪০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, শালগম ২৫ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
বাজারে দাম কমেছে রসুন ও পেঁয়াজের। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। বিক্রেতারা বলেছেন, ফরিদপুরে হালি পেঁয়াজ পুরোদমে বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এতে কমছে দাম।
রাজধানীর বনানী কাঁচাবাজারে আসা ক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে ব্রয়লার থেকে শুরু করে মুরগিসহ সব ধরনের মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বলতে গেলে নিয়মিত এসবের দাম বাড়ছে, দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না কখনোই। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে দশ টাকা পাঁচ টাকা বাড়তে বাড়তে ব্রয়লার মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৩০ টাকা। যা কয়েকদিন আগে ও ১৮০/ ১৯০ টাকা ছিল। এসব দেখার বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নেই। বাজার মনিটরিং থাকলে এসব অসৎ ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের পকেট এভাবে কাটতে পারত না।
দাম বাড়তির বিষয়ে গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারের মুরগি বিক্রেতা আক্কাস আলী বলেন, আজকে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে ২৩০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। সোনালী, কক, লেয়ার মুরগির দামও বাজারে কিছুটা বেড়েছে। আসলে এগুলো যখন যেরকম দামে কেনা হয় সেরকমই বিক্রি করতে হয়। বড় বড় যেসব ব্যবসায়ী আছে আড়ত আছে, অথবা যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তারাই দাম বাড়ায়।
এদিকে মাছের বাজারে দেখা যায়, চড়া বেশিরভাগ চাষের ও দেশি মাছের দাম। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। তবে দাম কমেছে কয়েকটি চাষের মাছের।
বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকা, চাষের শিং ৫০০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকায়। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট ৭০-৭১ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকা, গুটিস্বর্ণা ৫১-৫২ টাকা ও ব্রি-২৮ ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৬৬-৬৮ টাকা, ৭২ টাকা, ৪৯-৫০ টাকা ও ৫১-৫২ টাকায়।
দাম বৃদ্ধির বিষয়ে রাকিব নামে এক চাল ব্যবসায়ী বলেন, অন্যান্য বছর এই সময়ে কখনও চালের দাম বাড়েনি। এ বছর হুট করেই দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে মিলগেটে।
রোজার নিত্য পণ্য ছোলা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। আর প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০-১২০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৮৫-৯০ টাকা, ডাবলির ডাল ৮৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫-১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১১০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। তবে বাড়েনি খাসির মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়। আর ছাগলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।