নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম এ মামলা করেন।
মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন রুয়েটের সাবেক উপাচার্য ও বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম শেখ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এবং বর্তমানে ইইই বিভাগের অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। এ বিষয় কথা বলার জন্য দুজনকেই ফোন করা হয়। তবে তারা কেউ ফোন ধরেননি। কয়েকদিন আগেই কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সুপারিশের ভিত্তিতে দুদক অনুসন্ধানে নেমেছিল। ইউজিসিই প্রাথমিক তদন্তে এই অনিয়ম পায়। মামলা করার পর দুদক একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, পারস্পরিক যোগসাজশে অসৎ অভিপ্রায়ে নিজেরা লাভবান হয়ে অন্যদের লাভবান করার জন্য অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গ করে অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় কম নম্বর প্রাপ্ত প্রার্থীদেরকে মৌখিক পরীক্ষায় বেশি নম্বর প্রদান করে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ছয়জন সেকশন অফিসারের স্থলে ১৩ জনকে নিয়োগ প্রদান, জুনিয়র সেকশন অফিসার পদে নিয়োগের অনুমোদন ও শূন্য পদ না থাকা সত্ত্বেও সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদের বিপরীতে জুনিয়র সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ প্রদান, পিএ টু ভিসি/ডিরেকটর পদে দুইজনকে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও তিনজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ডাটাএন্ট্রি অপারেটর পদে একজনকে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও দুইজনকে নিয়োগ প্রদান, মালি পদে তিনজনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও সাতজনকে নিয়োগ প্রদান, ড্রাইভার পদে একজনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও তিনজনকে নিয়োগ প্রদান এবং সহকারী কুক পদে তিনজনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও পাঁচজনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
এই অতিরিক্ত নিয়োগপ্রাপ্ত ১৭ জনের ২০২১ সালের জুন মাস থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত বেতন ভাতাদি বাবদ সরকারের মোট ১ কোটি ২৬ লাখ ১২ হাজার ১০৯ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাই দুর্নীতি দমন কমিশনের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম রাজশাহী বাদী হয়ে দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের মে মাসে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।ওই নিয়োগে তৎকালীন উপাচার্যের আপন দুই ভাই, ফুফাতো ভাই, শ্যালিকা, চাচাতো বোন, গৃহকর্মী ও তার স্বামীসহ আত্মীয়-স্বজনেরা চাকরি পান। তাদের অনেকে লিখিত পরীক্ষায় ফেল করেও চাকরি পান। এর জন্য নম্বরপত্রে কাটাকাটি (টেম্পারিং) করা হয়। রফিকুল ইসলাম শেখের আমলে রুয়েটে মোট ১৩৫ জনের নিয়োগ হয়েছে। এরমধ্যে ১৭ জনের ব্যাপারে দুদকের আপত্তি।
এএম/