ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে শুরু করে মেরিন ড্রাইভের ইনানী পাটুয়ারটেক থেকে পাথুরে সৈকত পর্যন্ত পর্যটকদের ভিড়। ইতোমধ্যে কক্সবাজার সাগর পাড়ের হোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্ট এর সব রুম বুকড হয়েছে গেছে।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকাল থেকে দীর্ঘ সৈকতকে মাতিয়ে তুলছে লাখো পর্যটকের হাঁক-ডাক। কেউ সাগরের ফেনিল ঢেউয়ে গা ভাসিয়ে, কেউ রজততটে বালু নিয়ে খেলছেন, কেউ বা বীচে বাইক চালিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতেছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে আজ ঈদের পরের দিন পর্যটকরা সৈকতের কীটকটে বসে, ওয়াটার বাইক, বীচ বাইক ও ঘোড়ায় চড়ে মনের আনন্দে ঘুরছেন। কক্সবাজারের ইনানী, পাটুয়ারটেক, মহেশখালী, রামুর বৌদ্ধ মন্দিরসহ অন্যান্য বিনোদন স্পটেও পর্যটকদের পদচারণা লক্ষ্য করা গেছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোন। এছাড়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল টিম টহল জোরদার করেছে।
ইতোমধ্যে কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল গুলোর ৮০ থেকে ১০০ ভাগ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনের সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, আগামী সোমবার পর্যন্ত পর্যটকদের পর্যটকদের চাপ থাকবে। রমজান মাসের পর পর্যটন ব্যবসায় ফের চাঙ্গাভাব ফিরে এসেছে বলে তিনি মনে করছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল পর্যটন নগরী কক্সবাজার। ফলে হাসি ফুটেছে হোটেল—মোটেল জোনের ব্যবসায়ীদের মুখে।
রাজধানী পুরান ঢাকা থেকে আসা রবিন-আইরিন দম্পতি জানান, প্রচণ্ড গরম পড়ছে। বালুচরও তপ্ত হয়ে উঠছে। তবুও সাগরের ফেনিল ঢেউয়ে গা ভাসিয়ে শান্তি পাচ্ছি আমরা। তারা জানান, বিকেলে তারা লাবণী পয়েন্ট ছেড়ে মেরিন ড্রাইভের পাটুয়ারটেক পাথুরে সৈকতে যাবেন।
পর্যটন ব্যবসায়ী মোশাররফ হোসেন দুলাল বলছেন, রমজান মাসজুড়ে প্রায় পর্যটকশূন্য ছিল কক্সবাজার। এখন ঈদের আগমনে দর্শনার্থীদের সেই খরা কেটে গেছে। ঈদের দিন থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকদের ঢল নেমেছে।
সকাল থেকে কলাতলী থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে লক্ষাধিক দর্শনার্থী নামেন বলে জানিয়েছেন সৈকতে দায়িত্বরত কর্মী বেলাল হোসেন।
তিনি বলেন, স্থানীয়দের পাশাপাশি আজ সকাল থেকে পর্যটকরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। শুধু ঈদের দিনেই অন্তত ৪০ হাজার পর্যটক সৈকতে নেমেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। শুক্রবারে এ সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশী হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, সৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছ থেকে খাবারের অতিরিক্ত মূল্য আদায় হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা তৎপর রয়েছি। খাবার টেবিলে মূল্য তালিকা রাখার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। পর্যটকরা তালিকা দেখে খাবারের চাহিদা জানাতে পারবেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোটেলের কক্ষ ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নির্দেশ অনেক আগে দেয়া আছে। অতিরিক্ত ভাড়া যেনো কেউ আদায় করতে না পারে সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পৃথক একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, হোটেলে কক্ষ ভাড়ার বিপরীতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।