চালের বাজারে শৃঙ্খলা আনতে পহেলা বৈশাখ রোববার (১৪ এপ্রিল) থেকে নতুন নিয়ম চালু করতে চেয়েছিল সরকার। চালের বস্তায় ধানের জাত, দাম, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম এবং উৎপাদনের তারিখ ও দাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হলেও সেই নির্দেশনা মানতে গড়িমসি করছেন চালকল মালিকেরা। সরকারের ঘোষণার তেমন প্রভাব দেখা যায়নি বাজারে।
সরকারের বেঁধে দেয়া সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর মিলাররা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। তারা বলছেন, চালের বস্তায় এসব তথ্য ছাপানোর ডাইস বানাতে অনেক অর্থ ও সময় দরকার। চাল বা ধানের জাত নিশ্চিত করারও বিষয় আছে। তবে ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, মূলত সময়ক্ষেপণের উদ্দেশ্যেই এসব যুক্তি দেখানো হচ্ছে।
একই জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল বাজারে ভিন্ন ভিন্ন নামে ও দামে বিক্রি হওয়ায় ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত হচ্ছেন। সেজন্য চাল বিপণনের আগে সব চালের বস্তায় চালকল মালিকদের নাম, ঠিকানা, উৎপাদনের তারিখ, মূল্য ও জাত সুস্পষ্টভাবে প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করে সরকার। ২১ ফেব্রুয়ারি দেয়া সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ব্যবসায়ীদের সময় দেয়া হয় ৫৩ দিন। সরকারের দেয়া সেই সময় শেষ হয় গেলো ১৩ এপ্রিল শনিবার।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এপ্রিলের ১৪ তারিখ অর্থাৎ পহেলা বৈশাখ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। ১৪ এপ্রিল থেকে চালের বস্তায় ধানের জাত ও মিল গেটের মূল্য লিখে বাজারে বিক্রি করার নির্দেশনা ছিল। একইসঙ্গে বস্তার গায়ে লিখতে হবে চাল উৎপাদনের তারিখ ও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা না হলে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন, (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২৩ এর ধারা-৬ ও ধারা-৭ অনুযায়ী শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু চার দিন পেরিয়ে গেলেও সরকারের সেই নির্দেশনা কেউ মানেননি। উল্টো চালকল মালিকেরা সময় বাড়াতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাগের গায়ে জাত ও দাম উল্লেখ করার নির্দেশনার বিষয়ে মিলমালিকেরা সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। তবে কত দিনের সময় তারা চান, সেটি উল্লেখ করেননি আবেদনে। খুব শিগগির মিলমালিক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের সঙ্গে বৈঠক করে আইনটি কার্যকর করা হবে।
বাংলাদেশ অটোমেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, জাত ও দাম উল্লেখ করার নির্দেশনা ইতিবাচক। চালের বস্তার ডাইস তৈরি করতে কমপক্ষে ৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়। এ জন্য ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে ধানের জাত নিশ্চিত করতে। এছাড়া ডাইসটি যথাযথ কি না, সেটি নিশ্চিত করার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।