অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার (২৭ এপ্রিল)।
অবিভক্ত বাংলার জাতীয় নেতা আবুল কাশেম ফজলুল হক তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং দূরদর্শিতার জন্য ছিলেন সুপরিচিতি। তিনি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
সর্বভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ফজলুল হক। তাঁর আপোষহীন ন্যায়নীতি ও অসামান্য বাকপটুতার কারণে রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি বেশি পরিচিত ছিলেন শেরে বাংলা (বাংলার বাঘ) নামে। সর্বভারতীয় রাজনীতির পাশাপাশি গ্রাম বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের জন্য সর্বপ্রথম তিনি একটি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।
বরিশাল জেলায় বাকেরগঞ্জের বর্ধিষ্ণু গ্রাম সাতুরিয়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৭৩ সালের ২৬শে অক্টোবর। আইনজীবী কাজী মুহম্মদ ওয়াজেদ ও সাইদুন্নেসা খাতুনের একমাত্র পুত্র ছিলেন তিনি।
এ কে ফজলুল হকের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বাড়ির পরিবেশে। বাড়িতেই তিনি আরবি, ফারসি ও বাংলা ভাষায় শিক্ষা লাভ করেছিলেন। পরে তিনি ভর্তি হন বরিশাল জেলা স্কুলে এবং সেখান থেকে ১৮৯০ সালে এন্ট্রাস পাশ করার পর উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে। প্রখর মেধাসম্পন্ন ছাত্র ছিলেন ফজলুল হক।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শেরে বাংলার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ এবং আলোচনা সভা।
জাতীয় এই নেতার ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আজ সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ও তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বরিশাল বিভাগ সমিতি এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। আজ শনিবার বিকেল ৪টায় মতিঝিল কিচেন ইয়ার্ড পার্টি সেন্টারের ভিআইপি রুমে এই আলোচনা অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু।
শেরে বাংলা ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। শিক্ষানুরাগী ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবেও ইতিহাসের পাতায় তার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর, যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী, কলকাতা সিটি করপোরেশনের প্রথম মুসলিম মেয়র ও আইনসভার সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনেও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদান ছিল। ১৯৪০ সালে তিনি ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি ২১ দফা দাবিরও প্রণেতা ছিলেন।
টিআর/