চার বছর আগে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ‘শনিবার বিকেল’ নামে একটি সিনেমা বানিয়েছেন। মুক্তির জন্য সেন্সর বোর্ডে জমাও দিয়েছিলেন নির্মাতা। কিন্তু মুক্তির অনুমতি মেলেনি। বরং সেন্সর বোর্ড সিনেমাটিকে নিষিদ্ধ করে দেয়।
পরে আপিল করেছিলেন ফারুকী। সাড়ে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও আপিলের ফল সম্পর্কে কিছুই জানেন না তিনি। কোনো উত্তরও পাননি। তাই মাঝেমধ্যেই নিজের সিনেমাটি নিয়ে মন খারাপ হয় তার। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি প্রদর্শিত হয়েছে এবং ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে। অথচ নিজ দেশেই মুক্তি দিতে পারছেন না।
গেলো রবিবার বিষয়টি নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন ফারুকী। এরপর মঙ্গলবার ফের ফারুকী সিনেমা মুক্তি নিয়ে বিভিন্ন সময় সেন্সর বোর্ড থেকে হয়রানি হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। আজ মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে নিজের হয়রানি হওয়ার এসব কথা লেখেন ফারুকী।
এই নির্মাতা লেখেন, আমার কত রাত গেছে অনিদ্রায়। কত দিন গেছে ক্ষমতাবানদের দুয়ারে হাত মুছতে মুছতে। কত দুপুর গেছে রাগে অন্ধ হয়ে। কত বছর গেছে নিজের চিৎকার নিজেই গিলে ফেলে। ধন্যবাদ, হে রাষ্ট্র! ফিল্ম মেকিংয়ের চেয়ে বড় কোনো অপরাধ তো আর নাই। সুতরাং, ঠিকই আছে।
তোমাকে ধন্যবাদ, আমাকে ঠিকঠাক সাইজ করার জন্য। ব্যাচেলরের সময় তুমি ভাবছো আমার ছবি সমাজ নষ্ট করে ফেলবে! মেড ইন বাংলাদেশে ভাবছো এই ছবি দেশ ধ্বংস করবে! সুতরাং দেড় বছর সেন্সর জেলে রাখছো! ঠিকই আছে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলারের জন্য সেন্সরের জেলটা একটু বোধ হয় কম হয়ে গেছিলো। অপরাধ বিবেচনায় ঐ ছবি আটকে রাখা উচিত ছিলো তিন বছর। যাই হোক শনিবার বিকেলে সেটা পুষিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। উঠতে বসতে এই ভাবে পিটিয়ে ছাল তোলার জন্য কৃতজ্ঞ।
কিন্তু এইভাবে বোধ হয় পুরোপুরি হবে না। কারণ একটা ছবি ভাবা হয়ে গেলে তো সেটা দুনিয়াতে এগজিস্ট করে গেল। বানানো হলে তো আরও শক্তভাবে এগজিস্ট করলো। আজ হোক কাল হোক সেটা তো দেখে ফেলবে মানুষ। তাই বলি কি এমন কিছু একটা করো যাতে ভাবনাটাও বন্ধ করে দেয়া যায়। এমন ওষুধ আবিষ্কার করো, হে রাষ্ট্র, যাতে কারো মনে ক্ষোভ জন্ম না নেয়! কারণ সম্মিলিত ক্ষোভের চেয়ে বিধ্বংসী কোনো অস্ত্র নাই! আরও খেয়াল রাখতে হবে ক্রমাগত চাপে এই ক্ষোভ যেন ঘৃণায় রূপ না নেয়। কারণ কে না জানে ঘৃণার চেয়ে বড় কোনো মারণাস্ত্র নাই।
শনিবার বিকেল-এর সর্বশেষ অবস্থা জানতে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের আরেক সদস্য মুশফিকুর রহমান গুলজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা প্রথম সেন্সর দেখে মতামত দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আমরা জানি না। এটা আপিল বোর্ড জানে।
শনিবার বিকেল সিনেমায় বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে আছেন বাংলাদেশের জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মামুনুর রশীদ, ইরেশ যাকের, ইন্তেখাব দিনার, গাউসুল আলম শাওন, নাদের চৌধুরী, ভারতের পরমব্রত চ্যাটার্জি, ফিলিস্তিনের ইয়াদ হুরানিসহ আরো অনেকে।
বিআ