টোকিওতে হয়ে গেলো জাপানিদের বৃহত্তম ধর্মীয় সানজা মাতসুরি উৎসব।গ্রীষ্মের আগমনের ঘোষণা দেয়া এই উৎসব টোকিও’র আসাকুসা এলাকায় উদযাপিত হয়েছে। রোববার(১৯ মে) খুব সকালে আসাকুসা মন্দির থেকে তিনটি ভ্রাম্যমান মন্দির বয়ে আনা হয়। এরপর, ‘মিকোশি’ নামে ওই বহনযোগ্য মন্দির নিয়ে শহরের বাসিন্দারা বিভিন্ন সড়কে শোভাযাত্রা করেন।
বার্ষিক সানজা মাতসুরি উৎসবে অংশ নিতে শুক্রবার থেকেই হাজারো ভক্ত টোকিওর রাস্তায় ভীড় জমায়। জাপানিদের তিনটি বড় উৎসবের মধ্যে এটি বৃহত্তম হিসেবে বিবেচিত। ঐতিহাসিক সেনসো-জি বৌদ্ধ মন্দিরের তিন প্রতিষ্ঠাতা হিনোকুমা হামানারি, হিনোকুমা তাকেনারি এবং হাজিনো নাকাতোমোর সম্মানে এটি উদযাপন করা হয়।
উৎসবের নিয়ম অনুযায়ি, শনিবার আসাকুসার ৪৪টি জেলা থেকে প্রায় ১০০ মিকোশি জড়ো হয় কামিনারিমনে। তারপর নাকামিসে ডোরি দিয়ে প্যারেড করতে করতে হোজোমনে গিয়ে থামে। সেখানে তারা ধর্মীয় গুরু কাননের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। পরে মিকোশিগুলোকে আসাকুসা মন্দিরে নেওয়া হয়। সেখানে শিন্টো পুরোহিতরা আসছে বছরের জন্য আশির্বাদ ও শুদ্ধ করে।
তিন দিনের ওই উৎসবটি শুরু হয় আসাকুসা জিনজা মন্দিরে। উৎসবের শেষ দিন রোববার কুখ্যাত ইয়াকুজা ক্রাইম সিন্ডিকেটের ট্যাটু করা সদস্যরা আসাকুসা জেলার মধ্য দিয়ে 'মিকোশি' নামে পরিচিত তিনটি বড় মন্দির বহন করে নিয়ে যায়। এই মন্দিরে মিকোশিগুলোকে রাস্তায় নামানোর আগে ঐতিহ্যবাহী প্যারেড করেন। এসময় সংগীতশিল্পী, অভিনয়শিল্পী এবং নৃত্যশিল্পীরাও ঐতিহ্যবাহী জাপানি পোশাকে আসাকুসার রাস্তায় অংশগ্রহণ করেন। আর এটি চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
সোনার ভাস্কর্য দিয়ে সাজানো ও সোনার পাতা দিয়ে আঁকা তিনটি বড় মিকোশির প্রত্যেকটির ওজন প্রায় এক টন। প্রতিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০ মিলিয়ন ইয়েন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় তিন কোটি টাকা।প্রতিটি মিকোশিকে চারটি লম্বা খুঁটির ওপরে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মিকোশিকে ৪০ জন লোক বহন করে থাকে।
১৩১২ সাল থেকে চলে আসছে জাপানের এই ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় উৎসব। প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক এই উৎসবে যোগ দিতে টোকিও আসেন।
এমআর//