কলকাতার নিউ টাউনে সঞ্জীভা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংকে যে মাংসের টুকরা পাওয়া গেছে তা সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের কি না তা নিশ্চিত করতে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনকে ভারতে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতে এমপি আনার হত্যাকাণ্ড তদন্তে ভারতের কলকাতা সফররত বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গতকাল কলকাতার উপকণ্ঠে নিউ টাউনে সঞ্জীভা গার্ডেনসে সেপটিক ট্যাংক থেকে কিছু চুলও বেশ কিছু মাংসের টুকরা উদ্ধার করে সেখানকার সিআইডি।
এ ব্যাপারে ডিবি প্রধান বলেন, আমরা এখানকার সিআইডিকে অনুরোধ করেছিলাম যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখানকার স্যুয়ারেজ লাইন পরীক্ষা করা দরকার। অপরাধীদের কাছ থেকে যে তথ্য পেয়েছি তার ভিত্তিতে সিআইডির সঙ্গে কিছু জায়গা পরিদর্শন করেছি। সিআইডি আজ পরীক্ষা করে বেশ কিছু মাংসের টুকরা উদ্ধার করেছে। সেটা ফরেনসিক করা হবে। ডিএনএ টেস্ট করা হবে। এরপর বোঝা যাবে যাবে, যে মাংসের টুকরা পাওয়া গেছে তা মাননীয় সংসদ সদস্যের কি না।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘অলরেডি আমি এমপি সাহেবের মেয়ের সঙ্গে কথা বলছি। আমি তাকে বলেছি তোমার আসা দরকার তুমি চলে আসো। সে অল্প কিছু দিনের মধ্যে চলে আসবে।’
সাংবাদিকদের ডিবি প্রধান হারুন বলেন, তদন্ত করতে পারিপার্শ্বিক সাক্ষী দরকার। পুরো মরদেহ না পেলেও খণ্ডিত অংশ হলেও দরকার। আজ যেটা পাওয়া গেছে, সেটার ফরেনসিক হবে। এখানে (ভারতে) ফরেনসিক আগেভাগে হয়। এমপি সাহেবের ভাই, মেয়ে আছে। ফরেনসিক হলে ডিএনএ টেস্ট হবে।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত মূল যে ঘাতক সে আমাদের কাছে অনেক কিছু বলেছে। আমরা সে অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় যাব। একটা মামলার তদন্ত করতে গেলে পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য যেমন দরকার তেমনি একটা শরীরের পুরো অংশ না হলেও খণ্ডিত কিছু অংশ উদ্ধারের প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী আপনারা জানেন আজকে সিআইডি সেফটি ট্যাংক মাংসের টুকরোগুলো উদ্ধার করেছে এবং তারা সেগুলো প্রিজার্ভ করেছে। আমরা তাদের বলব সেগুলো যাতে ফরেনসিক করা হয়।’
তার আগে ডিবির টিম মঙ্গলবার সারাদিন বাগজোড়া খালে উদ্ধার ও তল্লাশি চালানোর কাজ তদারকি করে। তাদের সহায়তা করে সিআইডির টিমের সদস্যরা৷ সেই খালে জাল ফেলে মরদেহের কোনো অংশ ডুবে আছে কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চালায় জেলেরা। কিন্তু তারা কিছুই পায়নি। এরই মধ্যেই সেফটিক ট্যাংক থেকে মাংসের টুকরো উদ্ধার করার কথা জানায় দেশটির সিআইডি।
গেলো ১৩ মে কলকাতায় গিয়ে নিখোঁজ হন এমপি আনার। সেদিন থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায় তার পরিবার। পরে ২২ মে খবর আসে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ডিবি বাংলাদেশ থেকে তিনজনকে অন্যদিকে কলকাতার সিআইডি দুজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হত্যায় জড়িত বলে দাবি করেছে উভয় দেশের গোয়েন্দারা।
এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় একটি অপহরণ মামলা ও কলকাতায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। হত্যার নেপথ্যে সোনা চোরাচালান চক্র জড়িত বলে দাবি করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এমপি আনারকে হানি ট্রাপে ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করতে চেয়েছিল হত্যাকারীরা।
টিআর/