আলোকচিত্র এবং আন্দোলনে অসামান্য অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালের ৭ জুলাই সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছিল খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলমকে। ইউনিভার্সিটি অব আর্টস লন্ডনের (ইউএএল) দেয়া সেই সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি ফিরিয়ে দিয়েছেন এই আলোকচিত্রী।
ড. শহিদুল আলমকে ইউএএল থেকে ফটোগ্রাফি ও অ্যাক্টিভিজম ক্যাটাগরিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একটি ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছিল। ২০২২ সালের ৮ জুলাই লন্ডনের রয়্যাল ফেস্টিভাল হলে এ সম্মাননা গ্রহণ করেন তিনি।
এ আলোকচিত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, ওই সময় আর্ট ও ডিজাইনের জন্য ইউএএল ছিল বিশ্বের শীর্ষ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম। ডিগ্রিটি আমি খুবই আনন্দের সঙ্গে ইউএএল’র চ্যান্সেলর গ্রেসন পেরি থেকে গ্রহণ করেছিলাম। কেননা, ওই সময় একাডেমিক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি ইউএএল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পান জেমস পুরনেল নামের একজন স্বীকৃত জায়নবাদী। আর ইউএএল’র শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রদর্শন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দেশটিতে যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানানোর দাবিতে ব্রিটেনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছে বলেও আশ্বস্ত হয়েছিলাম। তবে এই স্বস্তি কেটে যায়, যখন দেখতে পাই ইউএএল প্রশাসন, বিশেষ করে বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর শিক্ষার্থীদের অবস্থান থেকে অনেক অনেক দূরে। শিক্ষার্থীরা বলছে, তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, তাদের ছকে ফেলা হচ্ছে এবং তারা উপেক্ষিত।
শিক্ষার্থীরা আরও বলছে, পুমা, করনিট, এলভিএমএইচ, ল’রিয়েলসহ ইসরায়েল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড লিমনোলজিক্যাল রিসার্চ, শেনকার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বেজালেল একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড ডিজাইনসহ বিভিন্ন ইসরায়েলি বা এ দেশটির অনুষঙ্গী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ইউএএল ইসরায়েলের দখলদারিত্ব, বর্ণবাদ এবং চলমান গণহত্যার অংশীদার। আর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়টির এই অংশীদারত্বের অবসান দাবি করছে।
ড. শহিদুল আলম বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিভার্সিটি অব আর্টস লন্ডনের সঙ্গে কোনোভাবেই আমি যুক্ত থাকতে চাই না। এলসিসির ডিন অব মিডিয়া স্টিফেন ক্রসকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের সম্মানসূচক ডক্টরেটটি ফিরিয়ে দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন এ আলোকচিত্রী।
প্রসঙ্গত. ড. শহিদুল আলম দৃক পিকচার লাইব্রেরি, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট ও মেজরিটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮৩ সালে লন্ডনের বেডফোর্ড কলেজ থেকে জৈব রসায়নে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন এই আলোকচিত্রী।