বিসিএস পরীক্ষার জট লেগেই থাকে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী একটি বিসিএসে আবেদন করলে একবার কেবল একটি বিসিএসই দেয়া যায়। চাকরির বয়স থাকা পর্যন্ত প্রতিটি বিসিএসেই আলাদা আলাদা আবেদন করেন আবেদনকারীরা। এভাবে যেমন সময় নষ্ট হয়, তেমনি বারবার আবেদনের ঝক্কিও পোহাতে হয় চাকরিপ্রার্থীদের। এ পদ্ধতিতে নতুনত্ব এনে সমস্যাটির সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ৪৭তম বিসিএস থেকেই ইউনিক আইডি তৈরির পরিকল্পনা করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী একবার আবেদন করলেই তার নামে একটি আইডি সক্রিয় থাকবে। চাকরির বয়স থাকা পর্যন্ত ওই আইডিতে ঢুকে কিছু তথ্য আপডেট করেই আরেক বিসিএসে সহজেই আবেদন করতে পারবেন প্রার্থী। পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সোহরাব হোসাইন বলেন, চাকরিপ্রার্থীরা প্রতিটি বিসিএসে আলাদা আলাদা আবেদন করেন। প্রতিবারই একই তথ্য পূরণ করেন। এটি একটি সময় সাপেক্ষ বিষয়। আমরা চাইছি, প্রার্থী একবার আবেদন করবেন। সেই সময় পিএসসি ওয়েবসাইটে তাদের তথ্য দিয়ে ফরম অনলাইনে পূরণ করবেন। সব তথ্য ঠিক থাকলে ফরম সাবমিট করবেন। এ কাজটি হবে শুধু একবার।
তিনি বলেন, একবার আবেদন করা প্রার্থীর ইউনিক আইডি তৈরি হয়ে থাকবে পিএসসিতে। পরে যতবার তিনি পরীক্ষা দেবেন, ততবার শুধু কিছু তথ্য আপডেট করলেই সেই আইডি দিয়েই আরেক বিসিএসে অংশ নিতে পারবেন। আবার কোন বিসিএসে কোন পর্যায়ে আছে তার আবেদন, সেটাও ওয়েবসাইটে দেয়ার পরিকল্পনা আছে আমাদের।
পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা চাইছি প্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে এবং পিএসসি আধুনিক করতে। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিপ্রার্থীর ইউনিক আইডি থাকে। সেটি একবার পূরণ করলে তা থেকে যায়। ইমেইল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করলে ওই প্রতিষ্ঠানের নানান পদের চাকরিতে আবেদন করতে পারেন তিনি। আমরাও সেই দিকে এগোতে চাচ্ছি।
পিএসসি সূত্রে জানা যায়, ৩৮তম বিসিএসে আবেদন করেছিলেন ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৬৮ জন প্রার্থী। ৪০তম বিসিএসে ৪ লাখ ১২ হাজার প্রার্থী আবেদন করেছিলেন। ৪১তম বিসিএসে রেকর্ডসংখ্যক ৪ লাখ ৭৫ হাজার প্রার্থীর আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। ৪৩তম বিসিএসে আবেদন জমা পড়ে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ১৯০টি। ৪৪তম বিসিএসে মোট আবেদন করেন ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭১৬ জন। ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আবেদন করেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থী। সর্বশেষ ৪৬তম বিসিএসের ৩ লাখ ৩৮ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন।
আবেদনকারীর সংখ্যা থেকে দেখা যায়, সবশেষ ছয়টি সাধারণ বিসিএসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছিল ৪১তম বিসিএসে। আবেদনের হিসাবে ৪৩তম বিসিএস দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থায় আছে। ব্রুনাই, বাহামা, আইসল্যান্ড, বার্বাডোজ, সেন্ট লুসিয়া, গ্রানাডাসহ কয়েকটি দেশের জনসংখ্যাও এত নয়, যতজন ৪৩তম বিসিএসে আবেদন করেছিলেন।