কুচক্রী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকির মুখে জেলার প্রাচীনতম সাংবাদিক সংগঠন গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে তালা ঝুঁলিয়ে সিলগালা করেছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসকের পক্ষে সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান প্রতিষ্ঠানটি সাময়িকভাবে সিলগালা করেন।
এ সময় তার সাথে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া, সহকারী কমিশনার আশরাফুল হক ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সেরাজুল হকসহ অন্যরা। ওই সন্ত্রাসীদের হাতে লাঞ্ছিত প্রবীণ সাংবাদিক গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কে.এম রেজাউল হক ও যুগ্ম-সম্পাদক ইদ্রিসউজ্জামান মোনা গেলো ২৮ মে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিরাপত্তা দাবি করে তার আইনী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার এ ব্যবস্থা নিলো জেলা প্রশাসন।
আবেদনে ওই দুই ভুক্তভোগী সাংবাদিক জানান, জেলা প্রশাসনের পরিত্যক্ত জায়গায় বর্তমান ভবনে ২০০১ সাল থেকে তৎকালীন প্রশাসনের মৌখিক অনুমতি নিয়ে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর বর্তমান নির্বাহী কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। পূর্ব মনোনীত নির্বাচন কমিশনারদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সাধারণ সভা নির্ধারিত ছিল ২৫ মে। নিশ্চিত ভরাডুবি বুঝতে পেরে সভা শুরুর আগে কার্যনির্বাহী কমিটি ও সাধারণ সদস্যদের তালিকার বোর্ড (অনার বোর্ড) সুকৌশলে সরিয়ে ফেলে একটি চক্র। প্রেসক্লাবের মুষ্টিমেয় সদস্যের ইন্ধনে সাংবাদিক নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসী জোর করে সভা কক্ষে ঢুকে বৈধ সদস্যদের ওপর চড়াও হয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় সভাপতি কে.এম রেজাউল হকসহ বেশ কয়েকজন বৈধ সাংবাদিক লাঞ্ছনার শিকার হন। এ পরিস্থিতিতে সভাপতি সভা মুলতবি করে সহযোগীদের নিয়ে প্রাণ ভয়ে স্থান ত্যাগ করেন। এরপর সন্ত্রাসীরা বিকেলে প্রেসক্লাব দখল নেয়। সন্ধ্যায় অজ্ঞাত স্থানে বসে কমিটি করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় থানায়ও অভিযোগ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ আল হাসান বলেন, জেলা প্রশাসনের পরিত্যক্ত জায়গায় অবস্থিত কাচারি বাজার প্রেসক্লাবে দুই গ্রুপ হয়ে পাল্টাপাল্টি দখল করছেন। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপের দোষারপ করছেন। দুই কমিটি নিজের প্রেসক্লাব হিসেবে দাবি করছেন। উভয় পক্ষ জেলা প্রশাসকের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবদেন করছেন। যাতে করে উক্ত স্থানে সাংবাদিকদের মধ্যে কোন প্রকার হামলা বা সংঘর্য না হয়। এজন্য জেলা প্রশাসক মনোদয়ের আদেশে প্রেস ক্লাবটি সিলগালা করা হয়েছে। কতদিন সিলগালা অবস্থায় থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ আল হাসান বলেন, নিজের মধ্যে সমঝতা না হওয়া পর্যন্ত সিলগামা অবস্থায় থাকবে। তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মনোদয় আর ভালো বলতে পারবেন।