কক্সবাজার সীমান্তে বাংলাদেশের জনগণ ও স্থাপনা লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি ছোড়ার ঘটনা জাতিসংঘে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের যে কোনো সংঘাত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। দেশটির অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাংলাদেশের সম্পদ ও নাগরিকরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে ঢাকার পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে।
ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের যে কোনো সংঘাত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এটি যেন বাংলাদেশের জনগণ ও সম্পদকে প্রভাবিত না করে।
জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৬তম অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর অনুষ্ঠিত সংলাপে মিয়ানমার থেকে গুলি বর্ষণের বিষয়টি অবহিত করা হয়।
সম্প্রতি সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাতায়াতকারী নৌ-যান লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকদিন টেকনাফ হয়ে সেন্টমার্টিনে নৌ-চলাচল বন্ধ থাকে। যাতে খাদ্য সংকট দেখা দেয় দ্বীপটিতে। এরপরই জাতিসংঘে বিষয়টি তুলল বাংলাদেশ।
জাতিসংঘে মানবাধিকার কাউন্সিলের সংলাপে সংকট সমাধানে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হয়, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সাত বছর ধরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান।
জেনেভায় বাংলাদেশে স্থায়ী মিশনের ভারপ্রাপ্ত স্থায়ী প্রতিনিধি সঞ্চিতা হক সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে অংশ নেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান যাতে তারা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের আত্তীকরণের জন্য তাদের জীবিকার ব্যবস্থা উন্নয়নে বিনিয়োগ করেন। একই সঙ্গে তিনি মিয়ানমারে যুদ্ধরত সব পক্ষকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেওয়া এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা দিতে বলেন।
মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক কাউন্সিলে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর একটি প্রতিবেদন পেশ করেন। তিনি সাম্প্রতিক সহিংসতা বৃদ্ধি, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগ এবং রাখাইনে ঘৃণ্য যুদ্ধ-কৌশল নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১৮ জুন শুরু হওয়া জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এ অধিবেশন চলবে আগামী ১২ জুলাই পর্যন্ত।