যেকোনো কাজে সফলতা অর্জন করতে চাইলে সেই কাজে আপনার পুরোপুরি মনোযোগ দিতে হবে। তাই আপনি কোনো কাজ নিখুঁতভাবে করতে চাইলে সবার আগে সবটুকু মনোযোগ সেই কাজে দিতে হবে। সবার আগে আপনার মাইন্ড ফোকাস করে গোল সেট করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে উন্নতি করতে চাইলে এই ব্যাপারটা কোনোভাবেই ইগনোর করা যাবে না! এর জন্য আপনি কিছু টিপস অনুসরণ করতে পারেন। মাইন্ড ফোকাস করে কাজে মনোযোগী হতে ৭টি কার্যকরী টিপস নিয়ে আজকের এই ফিচার।
মাইন্ড ফোকাস করে মনোযোগ দিয়ে কাজ করছেন তো?
কোনো কাজ দীর্ঘক্ষণ ধরে করলে মনোযোগ হারিয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয়! কিন্তু অফিস, ক্লাশ, পারসোনাল লাইফ সবক্ষেত্রেই কিন্তু আপনাকে মাইন্ড ফোকাস করে কাজ করতে হবে। তবে আপনি যদি কাজে ফোকাসড হতে চান কিংবা ইম্প্রুভমেন্ট আনতে চান তবে আপনার মেন্টাল ফোকাসের বর্তমান অবস্থা শুরুতেই অ্যাসেসমেন্ট করে নিতে হবে।
এ জন্য আপনাকে-
#আপনার কাজ সম্পর্কে সবসময় অ্যালার্ট থাকেন
#আপনি কাজ শুরু করার পূর্বে একটি টার্গেট সেট করে থাকেন
#আপনার কাজকে কয়েকটি ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করেন
#আপনি কাজের ফাঁকে ছোট বিরতি নেন এবং পুনরায় কাজে ফিরে যান
মনোযোগ দিয়ে কাজ
কাজে মনোযোগ বাড়ানোর উপায়
১. কাজ শুরু করার আগে নিজের মস্তিস্ককে তৈরি করে নিন
যেকোনো কাজ শুরু করার আগে আপনার মস্তিস্ককে প্রস্তুত করে নিতে হবে। কীভাবে করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না? এক্ষেত্রে আপনার কমফোর্ট লাগে এরকম একটি পজিশনে বসে পড়ুন। এবার গভীরভাবে নিঃশ্বাস নিন যাতে করে আপনার নিঃশ্বাস পাকস্থলি পর্যন্ত পৌঁছায়। ২ মিনিট এই প্রসেসটি ফলো করুন। আপনার শরীর ও মনকে এভাবেই কাজ শুরু করার পূর্বে শান্ত করে নিন।
২. মোবাইল ফোন কিছু সময়ের জন্য দূরে রাখুন
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে আপনার মোবাইল ফোনটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার কাজে ফোকাস আনতে সবচেয়ে বেশি বাঁধা দেয়। জার্নাল অফ বিহেভিয়ারাল অ্যাডিকশনের সাম্প্রতিক একটি স্ট্যাডিতে প্রকাশিত হয়েছে যে, আপনি যখন কোনো কাজ করেন ঐ মুহূর্তে কাজ করার পাশাপাশি আপনি যদি আপনার মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করে থাকেন তবে আপনার কাজের প্রতি মনোযোগ অনেকটাই কমে যায়। তাই গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার পূর্বে যখন মেন্টালি প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ঐ সময় ব্যক্তিগত ফোনটি কিছু সময়ের জন্য দূরে রাখুন।
৩. ক্ষুধার্ত অবস্থায় কাজ শুরু করবেন না
খাবার খেয়ে কাজে বসবেন, পেটে ক্ষুধা থাকলে আপনি কখনোই কোনো কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন না। এছাড়াও, কাজের মধ্যে ব্রেক নিয়ে নাস্তা করে নিতে পারেন। চা-কফি, ফ্রেশ জুস, বাদাম, কুকিজ এগুলো কাজের ফাঁকে খেতে পারেন। এতে এনার্জি পাবেন, মাইন্ড ফোকাস করে কাজ করতেও সুবিধা হবে।
৪. কমফোর্ট জোন তৈরি করে নিন
আপনার কাজ শুরু করার পূর্বে রুমের টেম্পারেচার আপনার কমফোর্টেবল লেভেল অনুযায়ী সেট করে নিন। এছাড়াও আরামদায়ক জামা কাপড় পরিধান করুন। চাইলে রুমে এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করতে পারেন। আপনার বসার চেয়ারটি আরামদায়ক কিনা চেক করে নিন।
৫. আপনার ওয়ার্কস্পেস পরিচ্ছন্ন রাখুন ও লিস্ট তৈরি করুন
আপনি যে ডেস্কে কিংবা যে স্থানে কাজ করতে বসবেন, ঐ জায়গাটি সবসময় কাজ শুরু করার পূর্বে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নিন। অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থাকলে সরিয়ে ফেলুন। কাজের সুবিধার্থে একটি টু-ডু লিস্ট তৈরি করে সেটি পাশেই রাখতে পারেন। ডেস্কে ড্রয়ার থাকলে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো গুছিয়ে রাখুন। কাজের ফাঁকে আপনার তৈরিকৃত রিমাইন্ডার কিংবা টু-ডু লিস্টে চোখ বুলিয়ে নিন। দেখবেন, কাজের প্রতি অনেকটাই ফোকাস বৃদ্ধি পাবে এবং আগ্রহ জাগবে!
৬. প্রয়োজনে ওয়াশরুম ব্যবহার করুন
কাজের ফাঁকে ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে বিলম্ব না করে অবশ্যই যাবেন। কারণ আপনি যদি দরকারে ওয়াশরুমে না যান, তবে শারীরিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। আর মাইন্ড ফোকাস করে কাজ করতেও অসুবিধা হয়।
৭. নিজেকে মোটিভেট করুন
নিজেকে একটু সময় দিন, সেলফ মোটিভেশন-ই পারে যেকোনো কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য অনুপ্রেরণা যোগাতে। আপনার চারপাশে এমন কিছু বিষয় আছে যা আপনার মনোযোগ নষ্ট করতে পারে। সেই জিনিসগুলো কিংবা বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকার ট্রাই করুন। ‘আমি পারি, আমাকে এই কাজটা নিখুঁতভাবে শেষ করতে হবে’ এই বিষয়টা মনে গেঁথে নিন। মাইন্ড ফোকাস করে কাজ করতে আর অসুবিধা হবে না!
বোনাস টিপস
১/ চেষ্টা করবেন কোলাহল মুক্ত, নিরিবিলি স্থানে বসে আপনার কাজ সম্পাদন করার। কিন্তু যদি আশেপাশে মানুষজন থাকে, এরকম পরিবেশ পাওয়া সম্ভব না হয় তবে অবশ্যই আপনার আশেপাশের মানুষকে অবহিত করে রাখবেন যে; আপনি কাজে বসেছেন।
২/ নয়েজ ক্যান্সেলিং হেডফোন ব্যবহার করতে পারেন, এতে আশেপাশের সাউন্ডে আপনার মাইন্ড ডাইভার্ট হবে না।
৩/ আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি করার জন্য কিছু সময়ের জন্য ক্ল্যাসিক্যাল গান শুনতে পারেন। সফট সাউন্ড ট্র্যাক শুনলে মনে প্রশান্তি আসে, স্ট্রেস কিছুটা হলেও কমে।
জেএইচ