আর্কাইভ থেকে জাতীয়

সন্ত্রাস মোকাবেলায় জিরো টলারেন্স নীতিতে সরকার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সন্ত্রাস মোকাবেলায় জিরো টলারেন্স নীতিতে সরকার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

স্থানীয় সময় বুধবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেইয়াকা সনকো এবং জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ভ্লাদিমির ভরনকভের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসমূহে একথা বলেন তিনি।

ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) এ কথা জানানো হয়।

তৃতীয় জাতিসংঘ পুলিশ সামিটের সাইডলাইনে আয়োজিত এসব বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে অংশ নেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ এবং মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, পুলিশ সদরদপ্তর ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা।

গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দু’মন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, সন্ত্রাস দমন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে চলমান ও ভবিষ্যত সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্য, অনুকরণীয় ভূমিকা ও অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি গাম্বিয়ার শান্তিরক্ষী বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। গাম্বিয়ার শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে আশ্বাস দেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

আইজিপি বেনজীর আহমেদ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের অবদানের কথা তুলে ধরেন। গাম্বিয়ার পুলিশ বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ সহায়তা সম্প্রসারণে বাংলাদেশের পুলিশের সক্ষমতা সম্পর্কে সেদেশের প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন আইজিপি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশেষ করে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়েরের জন্য গাম্বিয়াকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, মানবিক কারণে বাংলাদেশ সাময়িকভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, এ আশ্রয় আরও দীর্ঘায়িত করা অসম্ভব। তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন অত্যন্ত জরুরি।

বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে মানবিক আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দু’মন্ত্রী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসু আলোচনা করেন।

দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য উল্লেখ করে গাম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে গাম্বিয়ায় কারাগারের পরিবেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় । উভয় প্রতিনিধিদল বন্ধুপ্রতীম দু’দেশের মধ্যে আরও পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ অন্বেষণে দ্বিপাক্ষিক সফরের বিষয়ে সম্মত হন।

জাতিসংঘের সন্ত্রাস দমন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল (ইউএসজি) এর সাথে বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত সন্ত্রাস দমন বিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগ ও নীতিসমূহ তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভবিষ্যতে এক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের এই অফিসের সাথে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ইউএসজি সন্ত্রাস দমন এবং সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন নীতি, উদ্যোগ এবং সফলতার প্রশংসা করেন। তিনি ২০২৩ সালের জুনে অনুষ্ঠিতব্য সন্ত্রাস-বিরোধী সংস্থাসমূহের প্রধানদের আসন্ন উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান এবং সেখানে বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত উত্তম অনুশীলন ও সাফলতা তুলে ধরার অনুরোধ জানান। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কারিগরি সহায়তাসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রসারিত করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘ উদ্যানে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু বেঞ্চ ও রোপনকৃত বৃক্ষ পরিদর্শন করেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন সন্ত্রাস | মোকাবেলায় | জিরো | টলারেন্স | নীতিতে | সরকার | | স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী