কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা চত্বরে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিতে নির্মানের এক বছর পার হতেই ফাটল দেখা দিয়েছে। দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদে ফাটল দেখা দেয়ায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ স্থানীয় বিভিন্ন মহল।
শনিবার (১৩ জুলাই) ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বায়ান্ন টিভিকে মসজিদে ফাটলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বাস্তবায়নে এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ১১ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ১০৬ টাকা ব্যয়ে। মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি সাজিন কনস্ট্রাকশন লিঃ এ্যান্ড বাবর এ্যাসোসিয়েটস (জেভি) নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মান করেন। ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফুলবাড়ী উপজেলার দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মুসল্লিরা জানান, মসজিদটির নির্মাণের এক বছরের মাথায় সিড়িঁর নীচের গোডাউন রুমটির কমপক্ষে ৫ থেকে৭ টি স্থানে ফাটল দেখা দেয়। সেই ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি চুইয়ে দেয়ালের গা ঘেসে নামে। অন্য দিকে মসজিদটির নীচতলার পার্কিং এরিয়ার উপরের ছাদের পূর্ব পাশের ছাদের দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে পুরোটাই লম্বাভাবে ফেটে গেছে। ফলে পুরো ছাদটি ড্যাম হয়ে গেছে।
মুসল্লিরা আরও জানান, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় পুরো মসজিদটিতে বিদ্যুৎ সংযোগে প্রচুর সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে কারণে বিদ্যুতের সুইচ দিলেই স্পার্কিং শুরু হয়ে যায়। এছাড়াও নিম্নমানের লাইট সরবরাহের কারণে অধিকাংশ লাইট অকেজো হয়ে আছে। মসজিদটির বাইরে প্রটেকশন দেয়াল দেয়ার কথা থাকলেও সেটি দেয়া হয়নি। ফলে মসজিদটির বাইরের অংশ অরক্ষিত। প্রতিনিয়ত কুকুর-বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণী সহজেই প্রবেশ করে জায়গাটি অপরিস্কার করে তোলে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আজিজ মজনু ও জাহাঙ্গীর আলম জানান, বর্তমান সরকার যেখানে সারাদেশের জেলা-উপজেলাগুলোতে এই দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ নির্মাণ করায় এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। সেখানে কিছু অসাধু ঠিকাদার ও কর্মকর্তার কারণে সরকারের উন্নয়নমুলক কাজ গুলো নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ করায় সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাজিন কনস্ট্রাকশন লিঃ এ্যান্ড বাবর এ্যাসোসিয়েটস (জেভি) নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কুড়িগ্রাম গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্যাহ আল ফারুক মোবাইল জানান, মসজিদে ফাটল দেখা দেয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। দু’মাস হলো তিনি কুড়িগ্রামে যোগদান করেছেন। দ্রুত মসজিদটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
ইউএনও রেহেনুমা তারান্নুম জানান, মসজিদের ফাটলের বিষয়টি তাঁর আগের ইউএনও ও জানেন। তিনিও বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। বর্তমান ইউএনও পুনরায় মসজিদের ফাটল অংশগুলো পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন ।
আই/এ