খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে প্রায় ২৯ দিন পর রহিমা বেগম নিখোঁজের প্রাথমিক রহস্য উন্মোচন হলো। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে রহিমাকে ফরিদপুর থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মাকে ফিরে পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নিজের ফেসবুক পেজে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন মেয়ে মরিয়ম মান্নান।
তিনি লিখেছেন, ‘এইমাত্র দূর থেকে আমি আমার মাকে খুলনা ভিকটিম সেন্টারে দেখলাম। আমি আমার মাকে খুঁজেছি, পেয়েছি। আমার কলিজা শান্ত হয়েছে। আজকে ২৯ দিন পরে আমি জানলাম আমার মা ভিকটিম সেন্টারে আছেন। আমি নিজের চোখে মাকে দেখেছি, এটাই আমার শান্তি। এর থেকে শান্তি আমার আর কিছুই নেই। আমি চাই আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলতে, আমি চাই আমার মাকে জড়িয়ে ধরতে।
মরিয়ম আরও লিখেন, ধন্যবাদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র্যাব-৬, খুলনার পুলিশ ও প্রশাসনকে এবং ধন্যবাদ প্রশাসনিক সকলকে যারা আমার মাকে উদ্ধারে কাজ করেছেন। আজকে আমি ২৯দিন পরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরব, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি লিখেন, ‘আমি আমার মায়ের কাছে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ আমি। মায়ের সাথে দেখা হওয়ার পরে এবং কথা হওয়ার পরে আমি সকল সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবো।’
এদিকে, পাঁচ ঘণ্টা আগে মরিয়ম তার ফেসবুক পেজে আরও একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি তার মায়ের হারিয়ে যাওয়া থেকে খুঁজে পাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপের বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘সন্তান মাকে খুঁজবে খুব স্বাভাবিক। আপনার মা হারিয়ে গেলে আপনিও খুঁজতেন। ফুলপুরের লা* পর্যন্ত গিয়েছি মাকেই খুঁজতে। ফুলপুর থানার ওসিকে আমি তাদের দেয়া একটা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই কল দেই। ওখানে যাই, ডিএনএ টেস্টের জন্য আবেদন করি। আমার মাকে আমি খুঁজেছি, সব জায়গায় গিয়ে একটা কথাই বলেছি আমার মাকে চাই। মা যদি আত্নগোপন করেন তাকে এনে শাস্তি দিন তাও আমার মা আমার চোখের সামনে এনে দিন দয়া করে।’
‘আজকে মাকে পাওয়া গেছে, আমি মায়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। মায়ের সাথে এখনো দেখা হয়নি, কথাও হয়নি। মায়ের কোনো ভিডিও অথবা অডিও পাইনি যেখানে মা বলেছেন তিনি আত্মগোপন করেছেন।’
মরিয়ম লিখেন, ‘আপনারা আমাকে যে যাই দোষ দিন না কেন, প্রথম দিন থেকে আমি ছুটিতেছি মায়ের জন্য। আজকে পেয়েও গিয়েছি। বারবার বলেছি মা আত্মগোপন করলে সামনে আনুন শাস্তি দিন আমার কলিজা জুড়াক। আমার কলিজা শান্ত হইছে। মায়ের চেহারাটা দেখেই আমার শান্তি। আপনারা যে যাই বলেন, এখন আমার মা আমার সামনে। মাকে খুঁজে পাওয়ার লড়াই ছিল আমার। আপনারা সহযোগিতা করেছেন। আপনাদের সহোযোগিতায় আজকে আমার মাকে খুঁজে পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।’
‘আমি খুশি, এক মুহূর্তের জন্যও বিচলিত নই। মাকে খুঁজতে গিয়ে যদি আমাকে দোষী হতে হয় আমি সেই দোষ মাথা পেতে নেয়ার শক্তি এবং সাহস রাখি, ইনশাআল্লাহ।’
তাসনিয়া রহমান
