আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

রাজধানীতে বাড়ছে ‘চোখ ওঠা’ রোগ

রাজধানীতে বাড়ছে ‘চোখ ওঠা’ রোগ

রাজধানীতে বাড়ছে চোখ ওঠা রোগ। অতি ছোঁয়াচে এ রোগ সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীদের জন্য। বিশেষত স্কুলপড়ুয়া খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য। এরই মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চোখ ওঠা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ক্লাসের একজনের চোখ উঠলে তা দ্রুত অন্যদের মাঝে ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় কিছু স্কুল সাময়িক বন্ধও রাখা হচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংক্রমণ কমাতেই স্কুল বন্ধ বা আক্রান্ত শিক্ষার্থীকে ছুটি দিয়ে বাসায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হচ্ছে।

চক্ষু বিশেষজ্ঞরা অবশ্য অভয় দিয়ে বলছেন, চোখ উঠলে চিন্তার কিছু নেই। এ রোগে আক্রান্ত হলে শিশুরা পাঁচদিন আর প্রাপ্তবয়স্করা সাত বা সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে (আলাদা) থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর পোস্তগোলায় ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসায় গত ছয়দিন আগে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর চোখ ওঠে। এরপর ক্লাসে আরও কয়েকজন আক্রান্ত হয়। পরে অনেক শিক্ষার্থীর মাঝে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় সাতদিনের জন্য মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

যাত্রাবাড়ীর জুরাইন কমিশনার রোডে সানভীম কিন্ডারগার্ডেন স্কুলে প্রায় ৩০ জন খুদে শিক্ষার্থী চোখ ওঠা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের আগামী শনিবার পর্যন্ত ছুটি দেয়া হয়েছে।

রাজধানীর এমন অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হঠাৎ চোখ ওঠা শুরু হয়েছে। একজন আক্রান্ত হলে দ্রুত সেটি মহামারি আকারে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. জাফর খালেদ বলেন, শিশুদের চোখ ওঠার হার বেড়েছে। এটি একটি ভাইরাস, যা করোনার মতো ছড়াচ্ছে। একজন আক্রান্ত হলে সংস্পর্শে থাকা অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে। এর প্রকোপ তিন থেকে ছয় মাস থাকতে পারে। তবে এর সংক্রমণ সক্ষমতা দু-তিন মাস স্থায়ী হবে। এসময়ের মধ্যে যারা কন্ট্রাকে আসবে তারা আক্রান্ত হবে। যাদের ইমিউনিটি (রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা) কম তারাই বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে। তবে চোখ ওঠা রোগের একটি ভালো দিক হচ্ছে, অল্প বয়সীরা দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, কারও চোখ উঠলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে আইসোলেশন (আলাদা রাখা) করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে যত দ্রুত আলাদা রাখা যাবে তত ভালো। এতে অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে। তবে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মতো দরজা-জানালা বন্ধ রাখার প্রয়োজন হয় না। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা ভালো। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস বা একই বাথরুম ব্যবহার না করাও ভালো। চোখের পানি বা বাতাসে এ ভাইরাস ছড়াতে পারে। কোনো শিক্ষার্থী আক্রান্ত হলে অন্তত সাতদিন স্কুলে যাওয়া যাবে না। দেশে প্রতি বছরই চোখ ওঠার সংক্রমণ কম-বেশি হয়।

বিপ্লব আহসান 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন রাজধানীতে | বাড়ছে | চোখ | ওঠা | রোগ