হেপাটাইটিস সি সংক্রমণ কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের নয়, শিশুদের জন্যও মারাত্মক। পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। যদিও এখন হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধের জন্য ওষুধ এসে গিয়েছে এ দেশেও, তবুও শিশুদের সাবধানে রাখতেই হবে।
মূলত রক্তের মাধ্যমেই হেপাটাইটিস সি ছড়ানোর ভয় থাকে। ফলে বহু থ্যালাসেমিয়া এবং হিমোফিলিয়া রোগী এর শিকার হন। তা ছাড়া ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ থেকেও সংক্রমণ ছড়ায়। দীর্ঘ দিন হেপাটাইটিস সি-র চিকিৎসা না করিয়ে রেখে দিলে তার জের হতে পারে মারাত্মক। সিরোসিস বা লিভার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকিই বেশি। আর চিকিৎসাও বেশ খরচসাপেক্ষ।
শিশুদের কী কী লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে?
- চোখ ও ত্বকে হলদে ছাপ পড়ে যাওয়া
- পেশির ব্যথা, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা
- পেটে ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া
- গাঢ় হলুদ রঙের প্রস্রাব
- বমি ভাব, প্রচণ্ড ক্লান্তি, ঝিমুনি
বাবা-মায়েরা কী করবেন?
এক বছর এবং তার বেশি বয়সি শিশুদের হেপাটাইটিসের টিকা দিয়ে রাখতে হবে। হেপাটাইটিস সি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিঃশব্দে থাবা বসায়। রোগ ছড়ানোর অনেক পরে ধরা পড়ে। শিশুদের ক্ষেত্রে জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয়। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকায়, দ্রুত এই অসুখ ছড়িয়ে পড়ে। হেপাটাইটিসের জন্য স্ক্রিনিং দরকার, রক্ত পরীক্ষায় রোগ ধরা পড়ে। লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে ও রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে, তা দ্রুত চিকিৎসায় সারানো সম্ভব। সঠিক সময়ে রোগ নির্ধারণ ও চিকিৎসা লিভারের গুরুতর জটিলতা প্রতিরোধ করতে পারে।
পাশাপাশি শিশুর খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে। পরিষ্কার পানি খাওয়ান। খুব ভাল হয় যদি পানি ফুটিয়ে খাওয়াতে পারেন। বাড়িতে বানানো হালকা খাবারই দিন শিশুকে।
রাস্তা থেকে কেনা খাবার, কাটা ফল খাওয়াবেন না। সব্জি পরিষ্কার পানিতে ভাল ভাবে ধুয়ে রান্না করুন। শিশুকে খাওয়ানোর আগে নিজের হাত ভাল ভাবে ধুয়ে নিন। বাড়ির ভিতর ও চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখুন। বাইরে থেকে এলে নিজে পরিষ্কার হয়ে তবেই শিশুর কাছে যাবেন।
কেএস//