অন্তবর্তী সরকার কতদিন কাজ করবে তা বলা যাবে না। এই প্রশ্ন আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে করা যেত। তাদের দায়িত্ব শুধু নির্বাচন করা, ভোটার তালিকা করা। এবার কিন্তু প্রেক্ষাপট ভিন্ন, গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। তাই সরকারের মেয়াদ নিয়ে এখন বলা যাবে না। ছাত্রদের বলতে হবে, তারা কী চায়। বলেছেন অন্তর্বতীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপদেষ্টা হাসান আরিফ।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় মেয়র, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকলে কী করা হবে সে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসান আরিফ।
এ নিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আরও বলেন, যে আইনে তারা নির্বাচিত সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনেক জায়গায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) দায়িত্ব পালন করছেন। প্রশাসক বসানো হবে কি না, সে বিষয়ে আইন খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত হবে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ফাঁকফোকর দিয়ে যে দুর্নীতি হয়ে গেছে সেটা হয়ে গেছে। কিন্তু আগামীতে এমন হলে আমার নজরে নিয়ে আসবেন। অন্তত মূলনীতিটি যদি আমরা ঠিক করে দিয়ে যেতে পারি এবং সে ধারাবাহিকতায় চললে আমার বিশ্বাস আগামীতে দুর্নীতি কমে আসবে। দুর্নীতি একেবারে নির্মূল হয়তো সম্ভব হয় না। প্রেসিডেন্টও দুর্নীতি করে। তবে প্রিন্সিপালটা ঠিক করতে পারলে দুর্নীতির এই জায়গাটা অনেকটা সীমিত হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের সামনে টাস্ক অনেক বড়। অনেক দিনের জঞ্জাল জমে আছে। এটা এক-দুই দিনে ঠিক হবে না। সবার সহযোগিতা থাকলে এটা ধাপে ধাপে সমাধান হবে। কোনো পদক্ষেপ সঠিক হয়নি এমন বিবেচনা থাকলে সেটা আমাদের জানালে আমরা পুনরায় বিবেচনা করব। প্রতিটি জায়গায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোথায় বাজেট কত এবং কতদূর অগ্রসর হয়েছে সেগুলোতে নজরদারি করা হবে। যখনই আমার কাছে ফাইল নিয়ে আসা হয় (বিশেষ করে প্রকল্পের ফাইল) সেগুলো আমি নিজে খুঁটিনাটি দেখে এরপর সই করি। অভিযোগ আছে যে প্রকল্প হচ্ছে দুর্নীতি ও অপচয়ের একটা জায়গা। কেউ যদি এসে বলে প্রকল্পের সবকিছু ঠিক আছে স্যার সই করে দেন; কিন্তু আমি সই করি না।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা যদি আইন অনুযায়ী কাজ করি তাহলে কিন্তু দুর্নীতি অটোমেটিক্যালি থাকবে না। আইনে আছে যে আপনি ১০০ টাকার কাজের ১০০ টাকারই কাজ করবেন। কিন্তু সেখানে যদি আমি ৩০ টাকা ভাগাভাগি করে নেই তাহলে সেখানে থাকলো মাত্র ৭০ টাকা। আইনে তো এমন বলা নেই যে ১০০ টাকা দিলে আপনি ৭০ টাকার কাজ করিবেন এবং বাকি ত্রিশ টাকা দিয়া আনন্দ-ফুর্তি করিবেন। সুতরাং আমরা যদি আইনের মধ্য থেকে কাজ করি তাহলে দুর্নীতিতে বড় একটা বাধা আসবে। আইন থেকে বিচ্যুত হলেই এটা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
হাসান আরিফ বলেন, যেখানে একটি বড় বাজেট থাকে এবং কর্মকাণ্ড থাকে সেখানে দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়ে যায়। পথ খুলে যায়। সে জায়গাগুলো বন্ধ করা আমাদের জরুরি প্রয়োজন। যারা সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেগুলো আমরা দেখে দেখে ব্যবস্থা নেব।
এসি//