বিপদ সীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কবলিত ফেনীর উত্তরের তিন উপজেলা ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া। তলিয়ে আছে রাস্তা-ঘাট ও ঘর-বসতি। তিন উপজেলায় দেড় শতাধিক গ্রামের দুই লক্ষাধিক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছে। গত তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়।
জানা যায়, ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পরশুরামের মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌরশহর সহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
ছাগলনাইয়ার পাঠান নগর, রাধানগর, শুভপুর ইউনিয়নেরও বেশ কয়েকটি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। এসব এলাকায় তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, পুকুর ও ফসলি জমি। কিছু কিছু এলাকায় মানুষের ঘরের ছাদ ও টিনের চালেও ছুঁয়েছে বানের পানি। আশ্রয় খুঁজছে স্থানীয়রা।
এদিকে বন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ সহায়তা নিয়ে মাঠে নেমেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্চাসেবী সংগঠন। ইতোমধ্যে দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী ও বিজিবি স্পিড বোট ও নৌকা নিয়ে মাঠে নেমেছে। বানের পানিতে এখন পর্যন্ত ১ জন নিহত ও ১ জন নিখোঁজ রয়েছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক সেলিনা আক্তার গণমাধ্যমে বলেন, বন্যা কবলিতদের উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি কাজ করছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনও মাঠে আছে। ইতোমধ্যে ২ হাজারের বেশি পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গেল মাসের শুরুতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদী ভাঙে প্লাবিত হয় ১০০ টির বেশি গ্রাম। যেখানে অবকাঠামো, ধান, ফসল ও মৎসে ক্ষতি ছাড়িয়ে যায় ৩০ কোটির বেশি। সেই ক্ষতি না পুষাতেই ১৫ দিনের মাথায় আবার বন্যা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার বাসিন্দারা। এবারের বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ কয়েশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
