জাতীয়

সাংবাদিক ও পুলিশ একে অপরের পরিপূরক : ডিএমপি কমিশনার

বায়ান্ন প্রতিবেদন

ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে ডিএমপি কমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

সাংবাদিক ও পুলিশ হচ্ছে একে অপরের পরিপূরক। সমাজে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। বলেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মাইনুল হাসান।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা  বলেন। 

ডিএমপি কমিশনার বলেন, “আমি এক ক্রান্তিকালে ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী, সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন সংস্থা ও নগরবাসীর সহযোগিতায় বর্তমান অবস্থায় উপনীত হতে পেরেছি। অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশের অন্যতম পূর্বশর্ত।” 

মাইনুল হাসান আরো বলেন, “জনগণ হল একটা শক্তি, সে শক্তির সাথে পুলিশের উপস্থিতি যুক্ত হলে যে কোন অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব। রাজপথে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য পুলিশ রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে।”

ক্র্যাবের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশ আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করে। অপরদিকে সাংবাদিকগণ তাদের লেখনির মাধ্যমে সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে পুলিশকে সহযোগিতা করেন। এভাবে পুলিশ ও সাংবাদিক মিলে কাজ করলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্থানে যেতে পারব। আমরা সম্মানিত মহানগরবাসীর জন্য ভালো কিছু করতে চাই। আপনারা আমাদের ভালো কাজ দেখলে প্রশংসা করবেন আর আমাদের কাজ করতে গিয়ে কোথাও কোন ভুল-ক্রটি হলে তা তুলে ধরবেন। তবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন আপোষ করা যাবে না। এ ধরনের সংবাদ পুলিশের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং উৎকর্ষতাকে অধিকতর শানিত করতে সহায়তা করে।

মতবিনিমিয় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রুজুকৃত মামলা সমূহ যথাযথভাবে তদন্তপূর্বক প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডিএমপির সাথে ক্র্যাবের যেসকল কর্মসূচি রয়েছে সেগুলো অব্যাহত থাকবে। সাংবাদিকদের নামে ঢালাওভাবে হত্যা মামলা যাতে না হয় সে বিষয়েও বিভিন্ন থানার ওসিদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোন মামলার এজাহারে নাম থাকলেই যে গ্রেপ্তার করতে হবে এমনটি আইনে বাধ্যবাধকতা নেই। তদন্ত শেষে তারপর গ্রেপ্তারের বিষয়টি আসে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মাইনুল হাসান বলেন,  ক্রিমিনাল ইভেন্ট কখনো তামাদি হয় না। ঢাকা মহানগরের আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। পেট্রোলিংসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ সময় ঢাকাবাসীর সহযোগিতা চান ডিএমপি কমিশনার।

মতবিনিময় সভায় ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান বলেন, ডিএমপির সাথে ক্র্যাবের বন্ধন অনেক পুরোনো। যেকোনো প্রয়োজনে আমরা আপনাদের সহযোগিতা পেয়ে থাকি। পুলিশের অনুপস্থিতিতে অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে আরোও বেশি দৃশ্যমান হতে হবে। জনগণের আস্থা ফেরাতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পূর্বের ন্যায় ওপেন হাউজ ডে, বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং, পুলিশি টহল ও তৎপরতা বাড়াতে গুরুত্বারোপ করেন তিনি। কমিশনার ক্র্যাব যে একটি বড় সংগঠন এবং পুলিশ আর ক্র্যাব জনগণের মঙ্গলের জন্য কাজ করে তা স্বীকার করেন। আর ভবিষ্যতে এক সঙ্গে কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন ক্র্যাবের সভাপতি।

সভার শুরতে ডিএমপি কমিশনার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মাহুতি দানকারী শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। একই সাথে স্মরণ করেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী ও আহত পুলিশ সদস্যদের।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অ্যাডিশনাল কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মোঃ ইসরাইল হাওলাদার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মোঃ শওকত আলী; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাগণ এবং ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সহ-সভাপতি শাহীন আবুদল বারী, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যগণ ।

 

এসি//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন ডিএমপি