আইন-বিচার

বিচার বিভাগ থেকে যেন কোনো অবিচার না হয় : আইন উপদেষ্টা

বায়ান্ন প্রতিবেদন

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ছবি: সংগৃহীত

বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে ঢালাও এবং গায়েবি মামলার কালচার শুরু করেছিল। ঢালাওভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে। গায়েবি মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি এই অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থন করে না। বললেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিষ্ট সরকারের আমলে বিচার বিভাগ থেকে অনেক অবিচার হয়েছে। বিচার বিভাগ থেকে যেন আর কোনো অবিচার না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আদালতে আসামির ওপর যেন হামলা না হয় এজন্য আমরা সকাল ৭টায় শুনানির ব্যবস্থা করেছি। কোনোমতেই একজন আসামিকে আদালত প্রাঙ্গণে হামলা করা যাবে না। আমরা ফ্যাসিস্ট কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে চাই।

বিচারকদের উদ্দেশে  ড. আসিফ নজরুল বলেন, আপনারা যারা বিচারক তারা সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়েছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে শপথ নেননি। কাজেই বিচার করবেন সংবিধান অনুযায়ী। বিচার বড় একটি মহৎ দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে কার্পণ্য করা যাবে না। এমন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে যেখানে মানুষ ন্যায় বিচার পায়। গায়েবি মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি এই অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থন করে না। ঢালাওভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে। এক্ষেত্রে বিচারকদের দেখতে হবে অযথা নাগরিকরা যেন হয়রানি না হয়।

অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ জানান, মেধাবী ও যোগ্যতার ভিত্তিতে বিচারকদের পদায়ন করা হবে। তিনি বলেন, মাজদার হোসেন মামলার রায় অনুযায়ী বিচার বিভাগের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করতে হবে। কোনো অন্যায় আবদার মানা হবে না।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিগতে দেড় দশকে গুম খুনের মাধ্যমে ভোট ও নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘৩৬ জুলাই থেকে কেউ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়নি। যার কৃতিত্ব আইন উপদষ্টা ড. আসিফ নজরুলের। অন্তর্বর্তী সরকার কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, জনগণের সরকার।’

এর আগে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দনে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদা খাতুন। তিনি বিচারক নিয়োগ ও পদায়নে মেধার জয় দেখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

মাহমুদা খাতুন বলেন, বিচারকরা অনেক সময় অবিচারের শিকার হন। এজন্য গাড়ির সুবিধা দাবি জানানো হয়। কারণ, তারা অনেক সময় স্পর্শকাতর মামলার বিচার শেষে রিকশায় চড়ে বাসায় যান। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আরও বলেন, এজলাস ও চেম্বারে তাদের থাকার জায়গার সুব্যবস্থা করতে হবে। নারী বিচারকের সংখ্যা বাড়ছে। এটা খুশির খবর।

আজকের এ অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। 

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আইন উপদেষ্টা