কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের শরীরে মিলেছে শর্টগানের গুলির চিহ্ন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তার। আইনজীবী বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রমাণ করে এটি ছিল হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন তার সহপাঠীরা।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আবু সাঈদের মৃত্যুর আড়াই মাস পর পাওয়া ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
আইনজীবী রোকনুজ্জামান বলেন, ‘ আবু সাঈদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন সুস্পষ্ট। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির ক্ষত। সবকিছু মিলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রমাণ করে, এটি হত্যাকাণ্ড। ফলে এ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কেউ ছাড়া পাবে না। ’
নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন আবু সাঈদের সহপাঠীরা। তারা বলছেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও দায়ী। আমাদের চাওয়া, সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়ায় দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
এর আগে, গেলো ১৬ জুলাই রাত ১২টায় আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তার মুত্যুকে হোমিসাইডাল বা হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবু সাঈদের কানের ওপরের দিকে মাথার খুলিতে দৈর্ঘ্যে ৩ ইঞ্চি ও প্রস্থে দেড় ইঞ্চি আয়তনের গর্ত ছিল, যেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। এ ছাড়া বুক, পেট ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট ছোট রাবার বুলেটের গর্ত ছিল। সেখান থেকেও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। মাথার আঘাত, শরীরের রক্তক্ষরণের কারণে আবু সাঈদ শকে চলে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গেলো ১৬ জুলাই পুলিশের তাক করা অস্ত্রের বিপরীতে বুক পেতে দাঁড়িয়ে ছিলেন আবু সাঈদ। এ সময় পুলিশ সদস্যরা হঠাৎ তার দিকে রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করে। তখন সাঈদের হাতে একটি লাঠি ছিল, যা দিয়ে তিনি গুলি ঠেকানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে মৃত্যু হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদের।
পুলিশের গুলির সামনে তার বুক পেতে দাঁড়িয়ে থাকার ওই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সে সময় দেশব্যাপী তুমুল আলোড়ন শুরু হয় এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলন আরও গতি পায়।
এসি//