ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। এতে জেলার তিন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মাছের ঘের ও কৃষি জমির। বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিছিন্ন রয়েছে।
রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হালুয়াঘাটের পানিবন্দি এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নারী-শিশুসহ এসব কেন্দ্রে বতর্মানে দেড় হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত দুর্গতদের জন্য তিন উপজেলায় ৩০ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া তাদের রান্না করা খাবারও দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান , ১৯৮৮ সালের বন্যা তিনি দেখেছেন, তখন এমন পানি ছিল না। বাড়িঘরে পানি উঠেছে। গরু-ছাগল নিয়ে বিপদে আছেন। গরু পানির মধ্যে বাঁধা। স্থানীয়রা খুব সমস্যায় আছেন। চলাফেরা খুব কষ্ট হয়, রাস্তায় বুক সমান পানি। ফসলের অনেক ক্ষতি হয়ছে। আমন ধান পানির নিচে পড়ে গেছে। এবার আমন ধান পাবেন, এমন আশা করা যায় না। অনেক শাকসবজির পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা কৃষি অফিস জানায়, ধোবাউড়া উপজেলায় নিমজ্জিত হয়েছে ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর ধান। এর মধ্যে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর, আংশিক নিমজ্জিত ৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমির ধান। এছাড়া ৬০ হেক্টর জমির সবজির ক্ষেত নিমজ্জিত।
এছাড়া হালুয়াঘাটে নিমজ্জিত হয়েছে ৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির ধান। এর মধ্যে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত ৪ হাজার ১০০ হেক্টর, আংশিক নিমজ্জিত ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর।
জানা যায়, ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর, জিগাতলা, পঞ্চনন্দপুরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নেতাই নদীর বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। এতে পুরো উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অনেক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছে।
জেলা মৎস কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ৭ হাজার ৮০ জন মৎসচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে ২১৭ লাখ, ভেসে গেছে ৫ হাজার ৬২৪ লাখ টাকার মাছ ও রেনুপোনা ভেসে গেছে ১৪৯ লাখ টাকার। মৎসখাতে মোট ৫ হাজার ৯৮৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
আই/এ