আইন-বিচার

অভিযুক্ত বিচারকদের ব্যবস্থা উচ্চ আদালতই নেবেন: আইন উপদেষ্টা

বায়ান্ন প্রতিবেদন

অভিযুক্ত বিচারকদের বিষয়ে এখন থেকে উচ্চ আদালতই ব্যবস্থা নেবেন। বলেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

রোববার (২০ অক্টোবর) সচিবালয়ে ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, হাইকোর্টে কিছু বিচারকের নামে অভিযোগ রয়েছে। তারা ফ্যাসিস্ট শক্তির নিপীড়ক যন্ত্রে পরিণত হয়েছিলেন। কারো কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। তাদের নিয়ে ছাত্র-জনতার অনেক ক্ষোভ রয়েছে। তাদের অপসারণের বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল অভিযোগ পেলেই অপসারণ উদ্যোগ নিতে পারবে।

আসিফ নজরুল আরও বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকার মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ফোরাম পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে, এটা ইতিবাচক।

সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন সম্পর্কে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী এরইমধ্যে গঠন করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ দুজন বিচারক মিলে গঠিত হয় জুডিসিয়াল কাউন্সিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন কেউ যদি আজই কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন, তাহলে সেটির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। অভিযোগ দিতে হবে, আলাদা নোটিফিকেশনের দরকার নেই।’

এর আগে রোববার সকালে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্বহাল করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের রিভিউ নিষ্পত্তি করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সংবিধানের এ-সংক্রান্ত ৯৬ অনুচ্ছেদ পুরোটাই পুনর্বহাল করেন আপিল বিভাগ। ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরে এলো সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে।

 প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রায়ের পর অ্যার্টনি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিচারপতিদের অপসারণের দরজা খুললো। রাজনীতি ও দুর্বৃত্তায়ন থেকে বেরিয়ে এলো বিচার বিভাগ।

প্রসঙ্গত, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। তবে এর বৈধতা নিয়ে রিট করলে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে ওই বছরের ৩ জুলাই আপিলটি খারিজ করে রায় দেন আপিল বিভাগ।

এরপর ২০১৭ সালের ১ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরে ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর রায় রিভিউ চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই রিভিউ পিটিশন গত আট বছরেও শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিন্তু অন্তর্বতী সরকার আসার পর গত ১৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।

 

এসি//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আইন উপদেষ্টা