মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সরাসরি ভোট নেওয়া হচ্ছে আজ মঙ্গলবার(৫ নভেম্বর)। এই নির্বাচনে দলবদ্ধভাবে চারটি দল ও কর্নেল ওয়েস্ট নামে নির্দলীয় এক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সংস্থারন করা জরিপ রলছে, নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে। সবশেষ জরিপ অনুযায়ি, কমলা হ্যারিস ও ট্রাম্প সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে কমলা হ্যারিসকে জয় নিশ্চিত করতে অন্য নারী প্রার্থী জিল স্টেইনের ভোটে ভাগ বসাতে চাইছে ডেমোক্র্যাট শিবির।
নির্বাচনে জয় পেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নাম লেখাবেন কমলা হ্যারিস। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিলো হিলারি ক্লিনটনের বেলায়। তবে ইলেক্টোরাল ভোটে হেরে যাওয়ায় ডেমোক্র্র্যাট শিবিরের সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। আট বছর পর আবারও সুয়োগ এসেছে কমলা হ্যারিসকে দিয়ে। একারণে তাকে জেতাতে জোরালো নির্বাচনি প্রচার চালায় ডেমোক্র্যাটরা। হ্যারিসের পক্ষে ভোট বাড়াতে নিয়েছিল ভিন্ন কৌশল।
ভোটারের সংখ্যা বাড়াতে কৌশলের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এক নারী প্রার্থীকে মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে ডেমোক্র্যাট শিবির। এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক তদবিরও প্রকাশ্যে এসেছে। ডেমোক্র্যাটদের এজেন্ট ও তদবিরকারীরা চাইছিলেন ওই প্রার্থীকে সরিয়ে তার দল যেন কমলা হ্যারিসের সমর্থন দেয়। মূলত, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য জয় ঠেকাতে এ উদ্যোগ নিয়েছিল কমলা হ্যারিস শিবির।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, কমলা হ্যারিসকে জেতাতে তৃতীয় প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় থাকা জিল স্টেইনের ওপর চাপ বাড়ানো হয়েছিল। তাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যেতে বা সরিয়ে দিতে চেষ্টা চলেছিল। চিকিৎসক ও অ্যাক্টিভিস্ট জিল স্টেইন যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। ৭৪ বছর বয়সী এই প্রার্থীগাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের সময় গ্রেপ্তার হয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন। ইসরায়েলের জন্য মার্কিন সমর্থন বাতিল করা, গর্ভপাত ও ট্রান্সজেন্ডারের অধিকার সুরক্ষা, বিনামূল্যে শিক্ষা ও চিকিৎসা ঋণ বাতিল করার পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন।
জিল স্টেইন ২০১২ ও ২০১৬ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে তিনি নির্বাচনে হেরে যান। এবার আরও সমর্থন আদায় করে নির্বাচনী মাঠে কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভোট ব্যাংকে ভয় ধরিয়েছেন।জিল স্টেইনের সমাবেশেও মানুষের সমাগম দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে গাজা যুদ্ধবিরোধী আমেরিকানদের সমর্থন পাচ্ছেন।
যুদ্ধবিরোধী মার্কিন ভোটারদের সমর্থনের কারণে জিল নির্বাচন বিশ্লেষকদেরও চোখে পড়েন। তাদের আলোচনায় জিলের নাম আসায় ইউরোপীয় গ্রিন পার্টির নেতাদের নজরে আসেন তিনি। তবে বৈশ্বিক সমর্থন পাওয়ার বদলে ইউরোপীয় নেতাদের একটি দল ইউএস গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জিল স্টেইনকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলেছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হওয়া থেকে বিরত রাখতে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করার জন্যও তাকে অনুরোধ করেছেন তারা।
দ্য গার্ডিয়ানের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, পর্তুগাল এবং ইউক্রেনসহ ইউরোপের ১৬টি দেশের গ্রিন পার্টির নেতাদের কাছ থেকে অনুরোধটি আসে। গেলো শুক্রবার এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘আমরা স্পষ্ট যে, কমলা হ্যারিসই একমাত্র প্রার্থী যিনি হোয়াইট হাউস থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার গণতন্ত্রবিরোধী, কর্তৃত্ববাদী নীতিগুলোকে বাধা দিয়ে রাখতে পারেন।’ তবে সবার অনুরোধ প্রথ্যাখ্যান করে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াননি জিল স্ট্রেইন।
এমআর//