সিনেপর্দায় ‘পথের পাঁচালী’র দুর্গার মৃত্যু শুধু অপুর মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল তাই নয়, দুর্গার মৃত্যু কাঁদিয়েছিল আপামর দর্শককে। এবার বাস্তবেও না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন পর্দার দুর্গা উমা দাশগুপ্ত।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) লাইম লাইটের অন্তরালে থাকা সেই অভিনেত্রী চলে গেলেন পরপারে। এদিন সকালে বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন উমা দাশগুপ্ত। ‘দুর্গা’র আবাহন হলেও ‘বিসর্জন’ অবশ্যম্ভাবী, সেই খবরে শোকে ন্যুয়ে পড়েছে টলিপাড়া। দীর্ঘ দিন ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনকে অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা-বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী রচনা ‘পথের পাঁচালী’কে পর্দায় নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন সত্যজিৎ রায়। সেই সিনেমার ছোট্ট দুর্গা এবং তার অভিনয় এতগুলো বছর পরেও দর্শকদের মনে জীবন্ত। বিশেষ করে কিশোরী দুর্গা ওরফে উমা দাশগুপ্তর সেই প্রাণোচ্ছল হাসি।
মাত্র একটি ছবিতে অভিনয় করেই বিশ্বজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন উমা দাশগুপ্ত। ‘পথের পাঁচালী’ চলচ্চিত্রে কিশোরী দুর্গা চরিত্রকে পর্দায় জীবন্ত করেছিলেন উমা। এরপর তাকে আর পর্দায় দেখা যায়নি। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন শিক্ষক।
মাসখানেক আগেই অন্তর্জালে আচমকা রটে যায় যে, উমা দাশগুপ্ত নাকি প্রয়াত! সেই খবর ছড়াতেই সিনেদুনিয়ার অন্দরে শোরগোল শুরু হয়ে যায়। পরে জানা যায়, অভিনেত্রী দিব্যি সুস্থ রয়েছেন। ভালো আছেন। শান্তিনিকেতন থেকে ফিরেছেন কলকাতায়। সেটা ছিল মার্চ মাসের কথা। তবে ১৮ নভেম্বর, সোমবার অভিনেত্রীর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার খবর এলো। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। উমাদেবী যে আবাসনে থাকতেন সেই একই আবাসনে থাকেন অভিনেতা-বিধায়ক চিরঞ্জিৎ। অভিনেত্রীর প্রয়াণের খবর নিশ্চিত করে শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি।
শৈশব থেকেই থিয়েটার করতেন উমা দাশগুপ্ত। যে স্কুলে পড়তেন, সেখানকার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পরিচয় ছিল। আর সেই শিক্ষকের সুবাদেই মানিকবাবু আবিষ্কার করেছিলেন ‘পথের পাঁচালী’র দুর্গা উমা দাশগুপ্তকে। যদিও তার বাবা চাননি মেয়ে সিনেদুনিয়ায় আসুক। তবে শেষমেশ উমার পরিবারকে রাজি করিয়ে নেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়।
এসি//