ব্রিটেনের এক নার্স মেতে উঠেছিলেন নিষ্ঠুর এক খেলায়। তিনি নবজাতক শিশুদের বিষাক্ত ইঞ্জেকশন পুশ করে হত্যা করতেন। তার বিরুদ্ধে সাত নবজাতক হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আরও ১০ শিশুকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন এ নার্স।
মঙ্গলবার ( ১১ অক্টোবর) মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের চেশায়ার শহরের কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করতেন লুসি লেটবি (৩২)। গত এক বছর ধরে তিনি নৃশংস হত্যাকাণ্ডগুলো চালিয়ে গেছেন।
এই সময়ের মধ্যে সাত শিশুকে হত্যা করেছেন তিনি। বিষভরা ইঞ্জেকশন ব্যবহার করে তিনি এসব হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। আরও ১০ জন শিশুকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন ওই নার্স। এ পর্যন্ত পাঁচজন শিশুপুত্র ও দুইজন শিশুকন্যাকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে লুসি লেটবির বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্র জানায়, কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালের নিও-নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে পরপর নবজাতক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠছিল। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এর কোনো কূলকিনারা করতে পারছিল না।
পুলিশের তদন্ত শেষে জানা যায়, হাসপাতালের কেউ একজন ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুদের ওপর বিষ প্রয়োগ করছে। এর পরই সন্দেহভাজন হিসেবে লুসি লেটবির নাম সামনে আসে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বেশিরভাগ সময় রাতের শিফটে ডিউটি নিতেন লুসি।
তদন্তে দেখা গেছে, ইনসুলিনের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে অথবা দুধ ও বাতাস ভরা ইঞ্জেকশন ওই শিশুদের পুশ করা হতো। এমনকি একটি শিশু জন্মের সময় একেবারে সুস্থ থাকলেও, লুসি তার দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। পরের রাতেই একই ঘটনা ঘটছিল। তবে শেষ মুহূর্তে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে বাঁচাতে সক্ষম হন।
লুসির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, একই দিনে একই শিশুকে দুই বার হত্যার চেষ্টাও করেছেন তিনি। এখন লুসির বিরুদ্ধে মামলার শুনানি চলছে ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টে। তবে আদালতে দাখিল করা তথ্য অনুযায়ী, লুসি মাত্র একটি শিশুপুত্রকে ইনসুলিন দিয়ে হত্যা করেছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত লুসি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে জানা জানা গেছে।
উম্মে রুম্মান