আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পুরোটাই ‘নিয়ন্ত্রণের’ দাবি আরাকান আর্মির

বায়ান্ন আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে  কয়েক মাস ধরে লড়াইয়ের পর দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের পুরো ২৭০ কিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।

রোববার(৮ ডিসেম্বর) সকালে মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আরাকান আর্মি এ দাবি করে। সোমবার(৯ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার সকালে জান্তার সীমান্ত এলাকার সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নম্বর ৫ লক্ষ্য করে হামলা চালায় আরাকান আর্মি। মংডু শহরের বাইরে তারা অবস্থান করছিল। আরাকান আর্মির দাবি,তারা জান্তা বাহিনীর পাশাপাশি তাদের মিত্র আরাকান রোহিঙ্গা আর্মির রোহিঙ্গা মিলিশিয়া,আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। তারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,মংডুতে লড়াইয়ের পর সোমবার আরকান আর্মি মিলিটারি অপারেশন কমান্ড ১৫–এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে গ্রেফতার করে। এর বাইরে ৮০ রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও জান্তা সেনাকে গ্রেফতার করেছে আরাকান আর্মি।

গত মে মাসের শেষ দিক থেকে মংডুতে হামলা শুরু করে আরাকান আর্মি। মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ পেতে তাদের ছয় মাস সময় লেগেছে। আরাকান আর্মির দাবি, বাংলাদেশ সীমান্তের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শহর মংডু, রাখাইনের বুথিডং ও শিন এলাকার পালেতাওয়ার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা।

আরাকান আর্মি (সংক্ষেপে এএ) রাখাইন রাজ্য (আরাকান) ভিত্তিক একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ১০ এপ্রিল ২০০৯ সালের ১০ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত আরাকান আর্মি হলো  ইউনাইটেড লীগ অফ আরাকান (ইউএলএ) এর সামরিক শাখা। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের দাবি তুলে প্রায় এক যুগ আগে এর সাংগঠনিক উদ্যোগ শুরু হয়।

আরাকান আর্মি এখন  রাখাইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গাওয়া, তাউনগুপ ও আন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে লড়াই করছে। এরইমধ্যে আন শহরে ৩০টি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে আরাকান আর্মি। অন্য শহরগুলোতেও এগিয়েছে বিদ্রোহী এ গোষ্ঠী। ইতোমধ্যে এ গোষ্ঠী গেলো বছরের অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে উত্তরের শান রাজ্যের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এর মধ্যে আরাকান আর্মি গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

এদিকে, নাফ নদ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, নাফ নদে আরাকান জলসীমায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কেউ যাতে নাফ নদ অতিক্রম করতে না পারে সেজন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আরাকান আর্মি | জান্তা | মংডু