খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে-সব মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক মামলা হয়েছিল সেগুলো ইতোমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। আগামী নির্বাচনে তার অংশগ্রহণে আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায়ে দণ্ডিত হলে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। শেখ হাসিনার নির্মম পরিণামের পর তার পাশে দলের কেউ দাঁড়াতে সাহস পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তি মূলক নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ মুখ্য নয়। যারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল, সংবিধান কেটে ছিঁড়ে মানুষের অধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করেছে তারা ইতিহাসের খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়ে তারা বিচারের মাধ্যমে কারাগারে যাবে।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছিলো উল্ল্যেখ করে তিনি আরও বলেন, ১৯৭৩ সালে কুমিল্লা থেকে হেলিকপ্টারে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে ঢাকায় এনে পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করার ধারাবাহিকতায় বিগত ৩টি নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছিল। এসব নির্বাচনকে যারা কলঙ্কিত করেছিল তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
ভবিষ্যৎ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ১০ দফা সুপারিশ জানিয়েছে।
সুপারিশগুলো হচ্ছে— বিগত নির্বাচনকে যারা বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সেই নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনী অপরাধে যুক্ত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা; সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অসদাচরণ ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত করা; শুধুমাত্র ভোটের দিন নয়, আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে যাতে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী পরিবেশ না থাকলে ইসিকে যে কোনো সময় ভোট বন্ধ কারার এখতিয়ার ফিরিয়ে আনা; নির্বাচনকালীন সন্ত্রাস, ভীতি সঞ্চার, বা অন্য কোনো ধরনের নির্বাচনী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া; দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরাসহ ঋণ খেলাপিরা কোনোভাবেই যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে জন্য কঠিন আইনের বিধান রাখা।
এছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া; যেসব আইনের কারণে নির্বাচনকালীন গণমাধ্যম সংবাদ পরিবেশনে বাঁধার সম্মুখীন হতে পারে সেসব আইন বাতিল করা; সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক দলগুলোসহ নাগরিক সংগঠনের সাথে অ্যাজেন্ডা ভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা; অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের স্বার্থে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধের উপায় বের করা এবং নির্বাচন কমিশনকে সকল মতভেদের ঊর্ধ্বে থেকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকা এবং কোনো চাপের সামনে মাথা নত না করা।
প্রসঙ্গত, ছায়া সংসদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ইষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
আই/এ