মেয়েকে ‘ভূতে’ ধরেছে। আর সেই ‘ভূত’ তাড়াতে তন্ত্রসাধনা করেছিলেন বাবা। মেয়ের চুলে লাঠি বেঁধে দু’টি চেয়ারের মাঝে দিনের পর দিন দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন তিনি। খাবার দিতেন না। দিতেন না পানিও। শেষমেশ মৃত্যু হয় বছর চৌদ্দ বছরের ওই কিশোরীর। ঘটনাটি ভারতের গুজরাতের গির সোমনাথ জেলার।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) ভারতী গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সুরাত থেকে গির সোমনাথ জেলার ধাওয়া গ্রামে মাস ছয়েক আগে এসেছিলেন ভবেশ অকবরী। সঙ্গে তার মেয়ে এবং ভবেশের ভাই দিলীপ। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভবেশ এবং তার ভাই কিশোরীকে নিয়ে নানা তন্ত্রসাধনা করতেন। মেয়েকে পুরনো ও ছেঁড়া পোশাক পরিয়ে রাখতেন। তারপর কিশোরীকে নিয়ে চাকলিধরে একটি মাঠে নিয়ে যেতেন।
পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ভবেশের বিশ্বাস ছিল তার মেয়েকে ‘ভূতে’ ধরেছে। তাই চাকলিধর মাঠে নিয়ে গিয়ে আগুন জ্বালিয়ে তার সামনে মেয়েকে দু’ঘণ্টা ধরে দাঁড় করিয়ে রাখতেন। তারপর মেয়েটির পোশাক ওই আগুনেই পুড়িয়ে দিয়ে মেয়েটিকে বেধড়ক মারধর করতেন। শুধু তাই নয়, অভিযোগ আছে মেয়েটির চুলে লাঠি বেঁধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখতেন। পানি, খাবার কিছুই দিতেন না। সেই অত্যাচারে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর মৃত্যু হয় সেই কিশোরীর।
প্রমাণ লোপাট করতে ভবেশ এবং দিলীপ দু’জনে মিলে মেয়েটিকে বেশ কয়েক দিন প্লাস্টিকে মুড়িয়ে বাড়িতে রেখে দেন। তারপর গোপনে পুড়িয়ে ফেলেন। জেলার পুলিশ সুপার মনোহর সিংহ জাডেজা জানিয়েছেন, মেয়েটির পরিবারের সদস্যদের আটক করা হয়েছে। তন্ত্রসাধনার নামে কিশোরীকে খুন করার একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
অনন্যা চৈতী